বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজশাহী মেডিক্যালে করোনায় ৫ দিনে ৩৯ মৃত্যু

  •    
  • ৩০ মে, ২০২১ ০২:০১

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, ঈদের আগে মানুষের চলাচল একটু বেশি হয়েছিল। এ ছাড়া রাজশাহীর পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ। সেজন্য বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও নিয়মিত চলছে। আবার অর্থনৈতিক কার্যক্রমও কিন্তু কিছুটা চলতে হবে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বেড়েই চলেছে করোনায় মৃত্যু। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭ জন।

শেষ পাঁচ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মোট ৩৯ জন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পরিস্থিতি দিন দিন ভয়ংকর হচ্ছে। অবস্থার উন্নতি করতে হলে এখন রাজশাহীতে কঠোর লকডাউন দরকার।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রামেক হাসপাতালে গত ৬ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউতে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ঈদের আগে ৬ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে মারা যান ২৫ জন। আর ঈদের পর থেকে গত দুই সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের।

ঈদের পর থেকেই পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। ১৬ মে মৃত্যু হয় ১৬ জনের। ১৭ মে মারা যান ৩ জন, ১৮ মে ৪ জন, ১৯ মে ২ জন, ২০ মে ৫ জন, ২১ মে ২ জন, ২২ মে মারা যান ২ জন। এরপর থেকে দিন যত যাচ্ছে করোনার মৃত্যু আতঙ্কিত করে তুলছে মানুষকে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে প্রায় ২০০ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর আগে কখনও হাসপাতালটিতে একসঙ্গে এত রোগী ভর্তি থাকেননি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৯১ জন। এর মধ্যে করোনায় সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৬০ জন। এই ভাইরাসের উপসর্গ রয়েছে বাকি ১৩১ জনের। ভর্তি রোগীদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৪ জন ও রাজশাহীর ৭২ জন। এর বাইরে নাটোরের ৯ জন, নওগাঁর ৬ জন, পাবনার ৪ জন, সিরাজগঞ্জের ২ জন, কুষ্টিয়ার ৪ জন রয়েছেন। দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন মোট ১২ জন।

হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, গত বছর করোনার তীব্রতর সময়ে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ১৩৬ জন ভর্তি হয়েছিলেন। এ বছর ঈদের পর থেকে ক্রমাগত হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে চাপে বাড়ছে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মূলত ঈদের পর থেকে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু বাড়তে থাকে। শেষ দুই সপ্তাহে এই হাসপাতালে যারা মারা গেছেন তাদের অর্ধেকেরও বেশি চাঁপাইনবাবগঞ্জের। আমাদের রোগীও বাড়ছে। বাড়তি রোগী নিয়ে আমরা জায়গা সঙ্কুলানও করতে পরছি না। হাসপাতাল পরিচালক বলেন, জায়গার অভাবে এখানে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া এখন খুবই কষ্টসাধ্য হয়েছে। সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

এদিকে, করোনা রোগীর মৃত্যু, আক্রান্ত বেড়ে যাবার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই। এ অবস্থায় প্রশাসনিক কঠোরতা দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘ঈদের পর থেকে পরিস্থিতি খারাপই হচ্ছে, অথচ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদাসীনতাও বাড়ছে। এ অবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিস্থিতি আমাদের জন্য উদ্বেগের। আবার সেখান থেকে অনেকেই চলে আসছে রাজশাহীতে। এটা ঠেকানো খুব দরকার। রাজশাহীর পরিস্থিতির উন্নতি করতে হলে রাজশাহীতেও বিশেষ লকডাউন দেয়ারও প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।’

এ বিষয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, ঈদের আগে মানুষের চলাচল একটু বেশি হয়েছিল। এ ছাড়া রাজশাহীর পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ। সেজন্য বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও নিয়মিত চলছে। আবার অর্থনৈতিক কার্যক্রমও কিন্তু কিছুটা চলতে হবে। আপাতত আমাদের যেগুলো বিধিনিষেধ আছে সেগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করছি। রাজশাহীতে করোনার প্রকোপ যেন বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগও কাজ করছে।

এ বিভাগের আরো খবর