গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নানা পদক্ষেপে আজ দেশের প্রতিটি গ্রাম বদলে গেছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শনিবার বিকেলে এ মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১২ বছর আগে যে গ্রাম ছিল, এখন আর সেই গ্রাম নেই। গ্রামের মেঠোপথ হারিয়ে গেছে। মেঠোপথ এখন ইট বিছানো কিংবা পিচঢালা রাস্তায় রূপান্তরিত হয়েছে। গ্রামে কুঁড়েঘর এখন আর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। কুঁড়েঘরের জায়গায় হয়েছে টিনের চালা কিংবা পাকা ঘর।’
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিএনপি ও তার মিত্রদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা সব সময় সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। কিন্তু নিজের দলের মধ্যে কোনো ঐক্য নেই। বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, সব দলের ঐক্য নয়, আগে নিজের দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করুন।
‘বিএনপির নেতারা নাকি বলেছেন অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপির জন্মই হয়েছে অগণতান্ত্রিক উপায়ে। বিএনপি যে অবৈধভাবে সৃষ্টি হয়েছে তা হাইকোর্টের রায়েও বলা হয়েছে। যে দলটির জন্মই অবৈধ, সে আবার অপরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, এটি সত্যিই হাস্যকর।’
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমাদের রাঙ্গুনিয়ায়ও দেখুন বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত, কেন্দ্রীয়ভাবেও বিএনপির এক নেতা একটি কথা বলেন, কিছুক্ষণ পর আরেক নেতা আরেকটি কথা বলেন। এভাবে তাদের নিজেদের মধ্যেও ঐক্য নেই। আবার তারা সব দলের ঐক্যের কথা বলে।’
তিনি বলেন, ‘তাদের জোটভুক্ত একটি দল আছে “ঐক্য প্রক্রিয়া”। অর্থাৎ ঐক্য নেই বলে ঐক্য প্রক্রিয়া চালাতে চাচ্ছেন তারা। সুতরাং বিএনপি ও তার মিত্রদের এসব বক্তব্য হাস্যকর। বিএনপিকে অনুরোধ জানাব আগে নিজের দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন, আমরাও চাই আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন এবং আমাদের বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনাও করুন।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে দেশ বদলে গেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। খাদ্যঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। একই সঙ্গে এই করোনাকালেও বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, পাকিস্তানকে আমরা অনেক আগেই ছাড়িয়েছি, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের এখন মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার।
‘এই করোনাকালে যেখানে পৃথিবীর সব কটি দেশে মাথাপিছু আয় কমেছে, অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটির জন্য বিএনপিসহ তার মিত্ররা একটু ধন্যবাদ জানাতে পারেনি। সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে লজ্জা লাগলেও দেশকে তো তারা ধন্যবাদ জানাতে পারত। দেশের জনগণকে তো ধন্যবাদ জানাতে পারত তারা, সেটিও করেনি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১২ বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ১২ বছর আগের শহর আর আজকের শহরের মধ্যেও অনেক পার্থক্য। এই বদলে যাওয়া কোনো জাদুর কারণে হয়নি, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।