যশোরের এক মেয়ে ঢাকায় গৃহকর্মীর কাজ করতে এসে কী ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেটি তুলে ধরার পর বাকরুদ্ধ হয়ে যান শ্রোতারা।
যশোর সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের ১৩ বছরের আমেনা বেগম ঢাকায় একটি বাসায় কাজ করতে গিয়ে এক বছর ধরে নির্যাতিত হচ্ছিল।
ঈদের পরে তাকে তার নানি উদ্ধার করে এনে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিন দিন চিকিৎসার পর ২৭ মে সে বাড়ি ফেরে।
শনিবার দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে জড়িতদের আটক ও বিচার দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে কেঁদে কেঁদে নিজের ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দেয় আমেনা।
আমেনা বলে, ছোট ছোট ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নির্যাতন করা হতো। বেধড়ক মারধর, গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, প্লায়ার্স দিয়ে নখ, চুল তুলে ফেলা ছিল নিত্য ঘটনা। জবাই করেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়।
‘এমনকি আমাকে হাত-পা বেঁধে বুকের ওপর পাড়িয়ে নির্যাতন করা হয়। এখনও বুক ও পেটে ব্যথা করে। ব্যথা সহ্য করতে পারি না’- এমন বর্ণনা দেয়ার পর মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দেয় ক্ষোভ।
আমেনার নানি জোহরা বেগম বলেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাপ দেয়া হচ্ছে। তার নাতনির ওপরে নির্যাতনের যেন অবশ্যই বিচার হয়।
মানববন্ধনে যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিয়ান মৌরিনসহ গ্রামের শতাধিক লোক অংশ নেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস বলেন, ‘আমেনার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের থানার মধ্যের নয়। আমি ভিকটিমের পরিবারকে থানায় আসতে বলেছি। আমরা সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি জানাব।’
আমেনা কাজ করতে গিয়েছিল বাদল শিকদারের বাড়িতে। তিনি নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটা ভালো না। ঘরের সবকিছু চুরি করে খেত। ঘর থেকে টাকা চুরি করত। কীভাবে ওর (আমেনা) শরীর ঝলসে গেছে, সেটা আমার জানা নেই।’