সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জেলার শ্যামনগর উপজেলায় পাতাখালি পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় প্রতীকী লাশ হয়ে দাবি তুলে ধরেন উপকূলের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ, ইয়াসির আরাফাত, সালাউদ্দিন, মাহি ও সালাউদ্দিন জাফরী।
উপকূলের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটি আয়োজিত এই অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিল্লাহ, তরিকুল ইসলাম, মুহতারাম বিল্লাহ, মুতাসিম বিল্লাহ, হাসানুল বান্না বক্তব্য দেন।
কর্মসূচিতে যারা অংশ নিয়েছেন তারা ‘আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই’, ‘একবারই মরব, বারবার নয়’, ‘জলবায়ু তহবিল কাদের জন্য? জবাব চাই’, ‘উপকূলের কান্না, শুনতে কি পান না’, ‘নিরাপদে বাঁচা, নয় কি আমার অধিকার’, ‘বাস্তুভিটা ছেড়ে, ভাসানচরে যাব না’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
বক্তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় যে মাটির বাঁধগুলো দেয়া হয়, সেগুলো জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে পারে না। আর লোকালয়ে পানি ঢুকে প্রাণহানির পাশাপাশি ব্যাপক ফসলহানি ঘটায়।
সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্পানেও এ ঘটনাগুলো ঘটে।
সবশেষ ২৬ মে ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদীর জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর তলিয়ে গেছে শতাধিক গ্রাম। ভেসে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির মৎস্যঘের। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা।
তবে এই ঝড়ের শক্তি অতটা ছিল না। যদি আরও শক্তিশালী ঝড় আসে, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কী হবে, সেই আশঙ্কার কথাও বলেন বক্তারা।
তারা বলেন, ১২ বছর ধরে উপকূলের মানুষ ভাসছে। প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তাব্যক্তিরা শুধু আশ্বাস দেন। নানা ধরনের মেগা প্রকল্পের গল্প শোনান। কিন্তু পরে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয় না।
টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে ব্যর্থ হলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ারও দাবি জানানো হয়।