নওগাঁর বদলগাছীতে এক গৃহবধূর গোসলের ছবি গোপনে মোবাইল ফোনে তুলে ব্ল্যাকমেল করে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ এবং শেষ পর্যন্ত এডিট করে ভিডিওচিত্র মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে অবশেষে মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বৃহস্পতিবার সকালে বদলগাছী থানায় এই মামলা করেন। এতে তিনি তাকে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করা যুবক ও এক প্রতিবেশীর নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করেন।
মামলার পর পুলিশ প্রতিবেশী নারীকে সকাল ১১টার দিকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তবে প্রধান অভিযুক্ত পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান থানার ওসি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে গৃহবধূর বিয়ে হয়। এ দম্পতির সাত বছরের একটি মেয়ে আছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ওই যুবক গৃহবধূর অশ্লীল ছবি তোলেন। পরে ছবি থেকে ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন। এভাবে ব্ল্যাকমেল করে গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
একপর্যায়ে গৃহবধূ বিষয়টি তার স্বামীকে জানান। তখন যুবকের পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। এতে যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবেশী শিউলি খাতুন নামের নারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের মোবাইলে গৃহবধূর অশ্লীল ছবির ভিডিও ছড়িয়ে দেন। এর পর সেই ছবি এডিট করে ভিডিও প্রকাশের পর গৃহবধূকে তার স্বামী গত ২০ মে তালাক দেন।
এরপর গত ২৪ মে গৃহবধূ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি পর্নোগ্রাফি আইনের মধ্যে পড়ায় বৃহস্পতিবার সকালে থানায় মামলা করা হয়।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামীর ভাতিজা গোসলের ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। ভয়ে বাধ্য হয়ে কুপ্রস্তাবে সাড়া দিই। ৮ মাস আগে ওই ভাতিজা বিয়ে করেন। তারপরও সে আমার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে চায়। এতে রাজি না হওয়ায় ছবি থেকে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়।
‘প্রথম ভিডিও প্রতিবেশী ওই নারী মাধ্যমে ছড়ানো হয় বলে জানতে পেরেছি। পরে ভিডিওর বিষয়ে জানাজানি হলে আমার স্বামী আমাকে তালাক দেন। কিন্তু আমি আমার স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চাই। পরিবারের কাছে আমাকে ছোট হতে হচ্ছে লজ্জায়। বিনা অপরাধে সম্মান, স্বামী, সংসার সবকিছু আমি হারালাম। আমি জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর লিখিত অভিযোগের পর মামলা রেকর্ড করে অভিযুক্ত নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার নারীকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।