পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া এক নারী পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে তানজিলা বেগম নামের গৃহবধু এ সন্তানের জন্ম দেন। এটা তার প্রথম সন্তান।
নবজাতক ও মা দুজনই সুস্থ আছেন এবং তারা আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন। নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে মো. বেল্লাল শরীপ। তার বাবার নাম মো. নুর আলম শরীপ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস।
নবজাতকের বর্তমান অবস্থা জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হালদার জানান, বিষয়টি আমরা জানার পর স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী আফরোজা বেগম ও জয়ন্তিকাকে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পাঠাই এবং পুরো বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. অনুপ কুমার সরকারকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
তিনি জানান, তাদের সহযোগিতায় শিশুটির স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাচ্চা ও মা দুইজনই সুস্থ আছেন। ওই দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী বর্তমানে নবজাতক ও তার মাকে দেখভাল করছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার জোয়ার শুরু হলে চারদিকে পানি প্রবেশ করে। আর এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যারা ছিল তাদের সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টা করি। এমন সময় নুর আলম শরীপ তার ঘরের চারদিকে পানি আসতে দেখে মঙ্গলবার বিকেলেই তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ির পাশে চান্দুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার কাছে খবর আসে যে, নুর আলমের স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠেছে। এই খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে তিনি কলাপাড়া হাসপাতালকে অবহিত করেন। পরে সেখান থেকে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের জানানো হলে আফরোজা বেগম ও জয়ন্তিকা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেন। তাদের সহযোগিতায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্বাভাবিকভাবেই শিশুটির জন্ম হয়।
চেয়ারম্যান তপন বিশ্বাস আরও জানান, আবহাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নবজাতক ও মা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। তাদের খাবারসহ সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দেয়া হবে।
এর আগে ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় কলাপাড়া উপজেলার একটি আশ্রায়কেন্দ্রে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম রাখা হয়েছিল বুলবুলি আক্তার বন্যা।