বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : বছর না ঘুরতেই ফের পানিতে কয়রা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৬ মে, ২০২১ ২০:৫৭

স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকায়। কিন্তু মেরামত টেকসই না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানির তোড়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকায় বেড়িবাঁধ আবারও ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে পানির যে চাপ, তাতে নতুন করে আরও কয়েক জায়গায় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

খুলনার কয়রা উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ জনপদ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং পূর্ণিমার জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্বল বেড়িবাঁধগুলো ভাঙছে একের পর এক।

উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া, পূর্ব মটবাড়িয়া, পবনা ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

অন্যদিকে মহেশ্বরীপুর, সদর ইউনিয়ন, উত্তর বেদকাশী ও দক্ষিণ বেদকাশীর ৩০টি দুর্বল পয়েন্ট টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানে উপকূলীয় এলাকায়। এতে শুধু কয়রা উপজেলার ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় লোকালয়।

এরপর গেল এক বছরেও ক্ষতিগ্রস্ত সেই বাঁধ পুরোপুরি মেরামত করা হয়নি। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকান। কিন্তু মেরামত টেকসই না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানির তোড়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকায় বেড়িবাঁধ আবারও ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। একই সঙ্গে পানির যে চাপ, তাতে নতুন করে আরও কয়েক জায়গায় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

অন্যদিকে পুটিমারি, জোড়শিং, ৫ নম্বর কয়রা, পবনা ও মঠবাড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। এসব এলাকার বাঁধ যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।

স্বেছাসেবী সংগঠন স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, আংটিহারা এলাকার শ্রীপদ মণ্ডলের বাড়ির সামনে বুধবার দুপুরের প্রবল জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়ায় কপোতাক্ষ নদের পাউবোর বেড়িবাঁধে প্রায় ১০ স্থানে ভেঙে লোনা পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। মঠবাড়ি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।

মহারাজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম মিস্ত্রি বলেন, দশহালিয়া বেড়িবাঁধের ১০ জায়গা ভেঙে পানি ঢুকেছে। অর্ধশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নতুন করে ভাঙছে বিভিন্ন স্থান।

তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে কয়রার কাটকাটা, ঘাটাখালি, মহারাজপুর, দক্ষিণ বেদকাশী ও মহেশ্বরীপুরে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। বুধবার সকাল থেকে ১০টি পয়েন্টে মাটি দিয়ে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছেন এলাকাবাসী।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির জানান, বুধবার দুপুরে আংটিহারা গ্রামের শ্রীপদ মণ্ডলের বাড়ির সামনে ও মহারাজপুর ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে পবনা বেড়িবাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে।

স্থানীয় জনগণ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধের ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতের জোয়ারে কপোতাক্ষ নদের গোবরা গুচ্ছ গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসী তাৎক্ষণিক মাটি দিয়ে বাঁধ রক্ষা করে। বর্তমানে ওই গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

একই নদের পদ্মপুকুরে ১ হাজার ফুট বেড়িবাঁধ ও হরিহরপুর গাজীপাড়ায় আধা কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের শাকবাড়িয়া নদীর জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ উপচে কাটকাটা বাজারের পূর্ব পাশে আধা কিলোমিটার পাউবোর বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এ ছাড়া শাকবাড়িয়া নদীর জোড়শিং গ্রামের পূর্ব পাশে প্রায় আধা কিলোমিটার ও গাতিরঘের গ্রামে প্রায় ১ হাজার ফুট বেড়িবাঁধ বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘আম্পান বিধ্বস্ত কয়রাবাসী জলোচ্ছ্বাস আতঙ্কে রয়েছে। দুপুরের ভরা জোয়ারে কয়েক জায়গা ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় লোকজন চেষ্টা করছেন বাঁধ টিকিয়ে রাখতে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমান বলেন, ‘পানির তোড়ে কয়রা উপজেলায় এখন পর্যন্ত দুই ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। বাঁধ উপচে পাঁচটি স্থান দিয়ে পানি ঢুকেছে। জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা দিয়ে পানি আটকাতে স্থানীয়রা কাজ করছেন। আমরা সার্বক্ষণিক মাঠে তদারকি করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর