ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ইয়ার্ডগুলোতে ঢুকে পড়েছে।
এর মধ্যে বন্দরের সিসিটি রেফার ইউনিট, এনসিটি, আইসিডি ইউনিট, ওভার ফ্লো ইয়ার্ডসহ ৪ নম্বর গেটের সড়কে পানি উঠেছে।
বুধবার দুপুরে বিভিন্ন ইয়ার্ডে হাঁটুপানি জমে যায়।
বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মালিক তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘দুপুরে পণ্য খালাসের কাজে এনসিটিতে গিয়েছিলাম। সেখানে ইয়ার্ডে পানি ছিল। সম্ভবত জেটি হয়ে জোয়ারের পানি ইয়ার্ডে ঢুকে পড়েছে। তাই কাজ করতে পারিনি।’
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘জোয়ার বাড়লে এমনটা মাঝে মাঝেই হয়। তবে জোয়ারের পানি ইয়ার্ডে বেশিক্ষণ থাকবে না। নেমে যাবে।’
তিনি জানান, বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের আউটার থেকে মাদার ভ্যাসেলকে (বড় জাহাজ) সরিয়ে গভীর সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কর্ণফূলী নদীতে থাকা লাইটার জাহাজকেও সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, সংকেত বাড়লে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হবে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপকূলীয় গ্রামগুলোতেও ঢুকেছে জোয়ারের পানি।
জোয়ারের পানি বেলা ১১টার দিকে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতায় বেড়িবাঁধ উপচে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঢুকতে থাকে। এতে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বাঁশখালীর গন্ডামারা, খানখানাবাদ, সরল, শেখেরখিল, বাহারড়া, শিলকূপ, ছনুয়াসহ ৯টি ইউনিয়নের ২২টি গ্রাম আংশিকভাবে প্লাবিত হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুজ্জামান চৌধুরী নিউজবাংলাকে এই তথ্যগুলো জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জোয়ারে বিভিন্ন জায়গায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে কাঁচা বেড়িবাঁধগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করার চেষ্টা করছি। তবে দুপুর দেড়টা থেকে ভাটা শুরু হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে।’
ছনুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। নিচু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে।’
শেখেরখিল ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু রায়হান বলেন, ‘ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে।’
তবে দুপুরে ভাটা শুরু হওয়ায় পানি নামতে শুরু করেছে বলে জানান গ্রামবাসী।