চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘোষিত ৭ দিনের লকডাউনের আজ দ্বিতীয় দিন। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও জেলায় লকডাউন কার্যকরে স্থানীয় প্রশাসন বেশ তৎপর।
লকডাউনে জরুরি সেবাসমূহ ছাড়াও আওতামুক্ত রয়েছে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কার্যক্রম। ভারত থেকে প্রতিদিন পণ্যবাহী ট্রাক এই বন্দরে আসে। ফলে ভারতীয় ট্রাকচালক ও সহযোগীদের বিষয়ে বিশেষ নজরদারি আনতে চাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
ভারত থেকে আসা ট্রাকচালক ও সহযোগীরা যাতে সাধারণের মাঝে মিশে যেতে না পারে, সে জন্য তাদের হাতে বা গলায় বিশেষ রঙের ফিতা বেঁধে দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশি চালকদের ক্ষেত্রেও ভিন্ন রঙের ফিতা হাতে বাঁধা বা গলায় ঝোলানো থাকবে।
বুধবার বুদ্ধপূর্ণিমার সরকারি ছুটির কারণে বন্দর বন্ধ রয়েছে। তবে বৃহস্পতিরবার থেকে আবার এই কার্যক্রম চলবে।
জেলা প্রশাসক মঞ্জরুল হাফিজ বলেন, ‘প্রতিদিন বন্দরে ভারতের যেসব চালক আসছেন তাদের আমরা অন্যদের থেকে আলাদা রাখতে চাই। যাতে বাংলাদেশি চালক বা অন্যরা তাদের সংস্পর্শে না আসতে পারেন। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে যাতে না পড়ে, তার সতর্কতা হিসেবে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
‘এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমের সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি। সিদ্ধান্ত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের চালকদের গলায় ভিন্ন ভিন্ন রঙের ফিতা ঝোলানো থাকবে। এ ছাড়াও বিজিবির সীমান্তে টহল আরও কড়াকড়ি করছে। আশা করি, আমাদের বাড়তি সর্তকতা কাজে দিবে।’
প্রথমদিনের মতো দ্বিতীয়দিনেও তৎপর জেলা প্রশাসনের একাধিক দল। লকডাউনের মাঝেও যারা যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন তাদের অনেককেই গুনতে হয়েছে জরিমানা। এ পর্যন্ত ১১২ জনকে ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করা করেছে।
আমের মৌসুম চলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আম বেচাবিক্রি চলছে। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা দুটোই কম। জেলা শহরের পুরাতন বাজারে ৬-৭ ভ্যান আম নেমেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার আম ব্যবসায়ী সুকুমার প্রামাণিক।
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি রপ্তানির কারণে প্রথমেই আলোচনায় এসেছিল ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কথা। তবে এখন পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে কোনো ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আছে কি না, তা অজানা। স্বাস্থ্য বিভাগ ৪৪ জনের নমুনা ঢাকায় পাঠালেও এখনো সেগুলোর ফলাফল জানা যায়নি।
স্বাস্থ্য বিভাগের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন করে আরও ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাওয়া ২১২টি নমুনার ফলাফলে ১৩১ জনের করোনা পজিটিভ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা শনাক্ত ১ হাজার ৫০৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৩ জন। নতুন ১৩১ জনসহ রোগীসহ চিকিৎসাধীন আছেন ৩৯৩ জন।
তাদের অধিকাংশই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে জেলার সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন ২০ জন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২৮ জন।