সরকারি কাজে বাধা এবং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে নাটোর-২ আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের ভাগ্নে নাফিউ ইসলাম অন্তরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সদর থানায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান সোমবার রাতে মামলাটি করেন।
আসামি নাফিউ ইসলাম অন্তর নাটোর পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে সিংড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাকবাংলো মেরামত সংস্কার কাজের টাইলস নিয়ে আলোচনার জন্য ঠিকাদার আমিরুল পাউবোর অফিসে যান। এসময় তার সঙ্গে ছেলে অন্তর ও ম্যানেজার ছিলেন। আলোচনার এক পর্যায় প্রকৌশলীর ওপর চড়াও হন অন্তর।
এসময় প্রকৌশলীর গলা টিপে ধরে হত্যার চেষ্টা ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন অন্তর। এতে তার চিৎকারে সহকর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে রাতেই অন্তরকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধা এবং কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন ওই প্রকৌশলী।
এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, `নাটোর জেলার সিংড়া পৌরসভা এলাকার আত্রাই ও নাগর নদীর ভাঙন হতে রক্ষা (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় অফিস ভবন ও পরিদর্শন বাংলো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পায় রংপুরের আলমনগরের হাসিবুল হাসান। তার প্রতিনিধি হিসাবে কাজটি শুরু করেন নাফিউ ইসলাম অন্তর, আমিরুল ইসলাম জাহান ও ম্যানেজার রাজিব।
`সেই কাজের টাইলস লাগানোর জন্য শিডিউল অনুযায়ী টাইলস এর নমুনা তাদের সরবরাহ করা হয়। তবে সেখানে শিডিউল মোতাবেক ভালো মানের টাইলস লাগানো নিয়ে মতানৈক্য হলে এ সময় অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করেন ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম জাহান।’
তিনি আরও বলেন, ‘গালিগালাজ না করে ভদ্রভাবে কথা বলতে বললে ঠিকাদারের ছেলে নাফিউ ইসলাম অন্তর উত্তেজিত হয়ে আমাকে গলা টিপে ধরে ও কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমার ঠোঁট কেটে যায় এবং হাত, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে। এ ছাড়া চাকরি করলে হত্যার করার হুমকিও দেয় অন্তর। তাই ঘটনার বিচার ও আমার নিরাপত্তার জন্য আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে নাফিউ ইসলাম অন্তরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে অন্তরের বাবা মীর আমিরুল ইসলাম জাহান বলেন, ‘আমার ছেলেকে তারা বিভিন্ন সময় কাজ দেয়ার কথা বললেও নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে অন্যদের কাজ দিয়ে দিয়েছে। গতকালও কাজের কথা নিয়েই এক পর্যায়ে বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী ও আমার ছেলে দুজনই চেয়ার থেকে পড়ে যান। সেখানে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সরকারি কাজে বাধা প্রদান, মারধর ও হত্যার হুমকির কথা উল্লেখ করে প্রকৌশলী আবু রায়হান মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’