বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খুলনায় দুই ফুট বেড়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৫ মে, ২০২১ ১৯:০৭

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল জানান, সাধারণত বেড়িবাঁধগুলো চার মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পানি ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম। তবে কোথাও কোথাও বাঁধের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তা অনেক নিচু অবস্থায় রয়েছে। ফলে বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর প্রভাব এবং ভরা পূর্ণিমায় নদ-নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের থেকে প্রায় দুই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের পানির তোড়ে উপকূলের অনেক স্থানে বেড়িবাঁধে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

জেলার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছার বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করলেও তা বেশির ভাগ স্থানে সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।

খুলনার আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশ উপকূলে এর প্রভাবের কারণে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইয়াসের প্রভাবে খুলনায় ঘণ্টায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। যা বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ধেয়ে আসার খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বিধ্বস্ত খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলবাসী। দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছাসহ নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধের বাইরে ও কাছাকাছি থাকা বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। মানুষের মধ্যে জলোচ্ছ্বাস ও বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বাঁধ উপচে লোকালয়ে ঢুকছে পানি

তারা আরও জানান, কয়রা উপজেলার আংটিহারা, মঠবাড়ি লঞ্চঘাটের পশ্চিমপাশ ও একই এলাকার মোসলেম সরদারের বাড়িসংলগ্ন বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। নাজুক অবস্থায় রয়েছে গোবরা ঘাটাখালী, কয়রা সদরের তহশিল অফিসসংলগ্ন বেড়িবাঁধ, দশহালিয়া, কাটকাটা, কাশিরহাটখোলা, দাকোপের নলিয়ান ও আন্ধারমানিক এলাকা, পাইকগাছার গড়ইখালীসহ বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ। স্থানীয় লোকজন বস্তা ও মাটি দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ ও ২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, খুলনাঞ্চলের নদ-নদীতে পানির স্বাভাবিক উচ্চতা থাকে তিন মিটারের কাছাকাছি। ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে পানি আরও দুই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণত বেড়িবাঁধগুলো চার মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পানি ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম। তবে কোথাও কোথাও বাঁধের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তা অনেক নিচু অবস্থায় রয়েছে। ফলে বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

বাঁধ ছুঁই ছুঁই জোয়ারের পানি

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই দিনে পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে। এর সাথে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হলে পানি আটকানো সম্ভব হবে না।

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, সোমবার রাত থেকে কয়রায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীতে ভাটা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবারও জোয়ার শুরু হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন। এলাকায় মাইকিং করাসহ স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে সহযোগিতা করছেন।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১১৬টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পাঁচ লাখ মানুষ অবস্থান করতে পারবে।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) আওতায় পাঁচ হাজার ৩২০ জন ও রেড ক্রিসেন্টের ৫০ কর্মী দুর্যোগ মোকাবিলায় সহযোগিতা করবেন। ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেয়া হলে উপকূলীয় এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হবে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার, চাল-ডাল ও অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর