ফেসবুক অথবা মোবাইল ফোনে মিষ্টভাষী অথবা সুন্দরী নারীকে ব্যবহার করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন পুরুষকে সর্বস্বান্ত করা চক্রের মূল হোতা এক নারীসহ তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে গাংনী থানার পুলিশ।
গত রোববার রাতে উপজেলার বামন্দী সিনেমা হলের নিচে থাকা একটি ঘোডাউন থেকে তাদের আটক করে গাংনী থানার পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।
এ সময় প্রতারণার ফাঁদে পা দেয়া এক ব্যবসায়ীকেও উদ্ধার করে পুলিশ। পরে উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ী আহসান হাবিব বাদী হয়ে গাংনী থানায় প্রতারণার মামলা করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।আটক ব্যক্তিরা হলেন এই চক্রের মূল হোতা বামন্দী বাজারের বাসিন্দা জোসনা রানী। তিন সহযোগী হলেন রানীর ভাই মেঘলা লাল ও একই গ্রামের মফিজুল এবং মকলেচুর রহমান।
এই চক্রটি দীর্ঘদিন মোবাইল ফোনে কখনও ছাত্র কখনও ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলত। এরপর কোনো স্থানে ডেকে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে আসছিল। আর সেই চক্রের শিকার মেহেরপুরের এক ব্যবসায়ী ও এই মামলার বাদী আহসান হাবিব।
আহসান হাবিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে আমার সাথে ফোনে পরিচয় জোসনার। আমাদের ফোনে মাঝেমধ্যে কথা হতো। প্রতারণাকারী জোসনা আমাকে শনিবার রাতে ফোন দিয়ে বামন্দীতে দেখা করতে বলে এবং এ কথাও বলে, আমার সাথে তার নাকি জরুরি দরকার আছে। আর আমি সরল বিশ্বাসে এসেই বিপদে পড়ে যাই।
‘সে এবং তার সহযোগীরা আমার সঙ্গে থাকা ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আরও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি ঘরের মধ্যে আমাকে আটকে রাখে। টাকা না দিলে আমার মুক্তি নেই এমনটি বলে তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে ও পরে গাংনী থানার পুলিশ হেফাজতে নেয়।’
পুলিশ জানায়, জোসনা রানী বেশ কয়েক বছর এলাকার বাইরে থাকেন। বছরে দুই-একবার এলাকায় এসে ১০-১৫ দিন করে থাকেন। এ সময় স্থানীয় বেশ কিছু ছেলের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এলাকার বাইরের পেশাটি নিজ এলাকায় প্রয়োগ করলে বিষয়টি এলাকাবাসী ও পুলিশের নজরদারিতে আসে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত সাজেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, গতকাল দুপুরের দিকে একটি চক্র বামন্দীতে একজন ব্যবসায়ীকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে, আমাদের সোর্সের এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাদের আটক করে।
আটক হওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে ওই নারীর বিরুদ্ধে অনৈতিক এবং সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টির অভিযোগে নরসিংদী জেলায় করা দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।