বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খামারির ‘লাভের অর্ধেক চান’ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা

  •    
  • ২৪ মে, ২০২১ ২৩:৪৯

রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, মুরগি মারা যেতে শুরু করলে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি জানানো হয়। তিনি ভিজিটের বিনিময়ে খামারে আসতে রাজি হন।

নওগাঁর পোরশায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঠিক পরামর্শের অভাবে ও অসহযোগিতার কারণে মুরগি মারা যাওয়ার অভিযোগ করেছেন এক খামারি।

খামারের প্রায় সব মুরগি মারা যাওয়ায় উপজেলার জালুয়া গ্রামের উদ্যোক্তা খামারি রবিউল ইসলাম কীভাবে ঋণের টাকা শোধ করবেন তা নিয়ে পড়েছেন দুর্ভাবনায়।

৩০ বছর বয়সী রবিউলের একসময় প্লাস্টিকের দোকান ছিল। তবে এই ব্যবসায় লাভ কম হওয়ায় ২০১৮ সালে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ব্রয়লার মুরগির খামার শুরু করেন। সেবার প্রায় ১২ হাজার টাকা লাভ করেন। তবে ব্রয়লার মুরগিতে পরিশ্রম ও খরচের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সোনালি মুরগি পালনের দিকে ঝোঁকেন।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লাভ যত বাড়ে খামারও তত বড় হয়। তৈরি করেন পাঁচটি শেড। এতে বিভিন্ন বয়সের ১২ হাজার ৭০০ মুরগি ছিল। তিনি প্রাণিসম্পদ অফিসের ‘এ শ্রেণির’ নিবন্ধিত খামারি।

এই খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্যদেরও। মাসিক ৭ থেকে ৮ হাজার বেতনে কাজ করেন পাঁচজন কর্মচারী।

কিন্তু গত ১৭ মে রাতে একটি শেডের চারটি মুরগি মারা যায়। এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে দফায় দফায় মুরগি মারা যায়।

এখন তার খামারে জীবিত আছে ৬০০ মুরগি।

রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, মুরগি মারা যেতে শুরু করলে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি জানানো হয়। তিনি ভিজিটের বিনিময়ে খামারে আসতে রাজি হন।

খামারে এসে তিনি মুরগিগুলোকে ২৪ ঘণ্টা ফ্যান দিয়ে বাতাস দেয়ার ও ভিটামিন ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।

কিন্তু তার এই পরামর্শে কোনো কাজ হয়নি।

রবিউলের খামারে মারা যাওয়া মুরগি। ছবি: নিউজবাংলা

বিষয়টি জেলা কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি সোমবার সকালে খামার পরিদর্শন করেন ও কিছু মরা মুরগি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান।

রবিউলের অভিযোগ, ওই কর্মকর্তা ভিজিট ছাড়া কোনো পরামর্শ দেন না। যতদিন নিয়মিত টাকা দিয়েছেন ততদিন এসেছেন। প্রতিবার তাকে ৫০০ টাকা করে দেয়া হয়েছে। এমনকি একবার ২০০০ টাকাও দিতে হয়েছে। টাকা দেয়া বন্ধ করে দিলে তিনি আসাও ছেড়ে দেন। ফোনেও পরামর্শ দিতে চান না।

রবিউলের আরও অভিযোগ, ‘পরামর্শ দেয়ার বিনিময়ে লাভের ভাগও চেয়েছেন ওই কর্মকর্তা।’

পোরশা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, মুরগি অসুস্থ হওয়ার ব্যাপারে ওই খামারি আমাকে আগে জানায়নি। পরে তাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অফিসের বাইরে কোথাও সেবা দিতে গেলে দূরত্ব ও রোগের ধরনের ওপর নির্ভর করে খামারিরা কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। তবে আমি কোনো টাকা চেয়ে নেইনি। অফিসে কেউ সেবা নিতে আসলে কোনো টাকা নেয়া হয় না।

রবিউলের খামারের লাভের অর্ধেক অংশ দিলে সেই শর্তে সেবা প্রদান করব এমন অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি ফোন কেটে দেন। এর পর বেশ কয়েকবার তাকে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন বলেন, সোমবার দুপুরে রবিউলের খামার পরিদর্শন করা হয়। মারা যাওয়ার মুরগির কিছু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য জয়পুরহাট ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল।

রিপোর্টে রাণীক্ষেত, কক্সিডিওসিস ও গামবুরো এ তিনটি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এ ছাড়া ওই খামারিকে রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ ও পরামর্শ দিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, খামারি রবিউল যদি আমাকে লিখিত অভিযোগ দেয় তবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর