বরিশালে ‘সম্পত্তির জন্য’ বীর মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ বাবার সামনে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভাইবোনের মধ্যে দফায় দফায় মারাপিটের ঘটনা ঘটেছে।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আব্দুল হামেদ ঘরামী। তিনি গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বাহাদুর গ্রামের বাসিন্দা। তার সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে ছেলেমেয়েদের বিরোধ রয়েছে।
তার মেয়ে বিউটি আক্তার নিউজবাংলাকে জানান, তার বাবার উন্নত চিকিৎসায় বাধা দেয়ায় মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
আর ছেলে জামাল ঘরামী জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার নামে বোন তার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে জমি লিখিয়ে নিয়েছেন। আরও জমি নেয়ার পাঁয়তারা করছেন, এ জন্য বাধা দেয়া হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মাজেদুল হক কাউছার জানিযেছেন, আব্দুল হামেদের জরুরিভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
বিউটি আক্তার বরগুনার বামনা উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক। তিনি জানান, তার বাবা দীর্ঘ দিন ধরে আলসারে ভুগছেন। শুক্রবার তার বড় ভাই দুলাল ঘরামী গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে বৃদ্ধা মাকে হাসপাতালে রেখে চলে যান।
মেডিক্যাল অফিসার মাজেদুল জানান, ‘শুক্রবার হামেদ ঘরামীকে অসুস্থ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান তার স্বজনরা। তার ময়ে বিউটি রোববার রাতে তার বাবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করে ছাড়পত্র নেন। খবর পেয়ে বিউটির মেজো ভাই উজিরপুর যুব উন্নয়ন অফিসের সহায়ক জামাল ঘরামী রাত ৮টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে বাবাকে ঢাকা নিতে বাধা দেন। এ নিয়ে পুরুষ ওয়ার্ডে দুই ভাইবোনের মধ্যে মারাধর শুরু হয়।’
তিনি আরও জানান, সোমবার সকালে জামালের ছেলে হাসপাতালে এসে তার দাদাকে ঢাকা নিতে নিষেধ করেন এবং ফুফু বিউটির সঙ্গে বাকবিতাণ্ডায় জড়ান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাতিজার সঙ্গেও ফুফু বিউটির এক দফা মারপিট হয়।
জামাল ঘরামী বলেন, ‘আমার ছোট ভাই কাশেম ঘরামী বোনের সহায়তায় বাবাকে ভুল বুঝিয়ে অনেক জমি সাবকবলামূলে দলিল করে নিয়েছে। এখন বাবার উন্নত চিকিৎসার নামে ঢাকায় নিয়ে বাকি জমি লিখে নেয়ার পাঁয়তারা করছে তারা।’
পারিবারিক বিরোধের জেরে সোমবার হাসপাতালে মারাপিটের একপর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান মেডিক্যাল অফিসার মাজেদুল।
গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুজ্জামান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার থানায় ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।