সারা দেশে গত কয়েক দিন তীব্র দাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। ঘরের বাইরে বের হলেই ঝরছে ঘাম। শরীরে দেখা দিচ্ছে পানির স্বল্পতা। শরীর চাঙা রাখতে অনেকেই পান করছেন লেবুসহ নানা ফলের শরবত। তবে খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে তালের শাঁসের। সুযোগ পেলেই লোকজন ছুটে যাচ্ছে তালের শাঁসের দোকানে।
চাহিদা বাড়ায় মানিকগঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভ্যানগাড়িতে বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস। দোকানগুলোতে এখন মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। সকাল-সন্ধ্যা চলছে তালের শাঁসের বেচাকেনা।
তালের শাঁসের বেচাকেনা দেখতে যাই শহরের পোড়রা এলাকায়। সেখানে কথা হয় হারু বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাজের জন্য দোকানে আসছিলাম। দোকানের পাশেই দেখি তালের শাঁস বিক্রি করতেছে। নিজেও কয়েকটা শাঁস খাইলাম, আবার ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু শাঁস কিন্যা নিছি।’
বেউথা এলাকায় কথা হয় আকাশ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাজের জন্য এখানে আসছিলাম। দেখলাম বেউথা ব্রিজের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করছে। গরমের কারণে ঘেমে গিয়েছি, পানির পিপাসা লাগে। তাই তালের দোকানে গিয়ে কয়েকটা তালের শাঁস খেলাম। পানির পিপাসাও মিটল, আবার পেটও ভরল।’
পোড়রা এলাকার তালের শাঁস বিক্রেতা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘হরিরামপুর থেকে এক হাজার টাকা দিয়া ছোট-বড় ১০০ তাল কিনছি। তাল কিনার পর গাড়ি ভাড়া করে আবার মানিকগঞ্জ আনতে হইছে। সব মিল্যা ১২০০ টাকার মতো খরচ হয়। এক পিস শাঁসের দাম ১০ টাকা আর তিন পিস একসঙ্গে কিনলে ২০ টাকায় বিক্রি করি। লাভ প্রায় দ্বিগুণ।’
মিতরা বাসস্ট্যান্ডের তালের শাঁস বিক্রেতা কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আগের মতো এখন আর তালের গাছ নাই। তালগাছ বেশি থাকলে তালের দাম কম হয়। কিন্তু এহন তালগাছ কম, তাই তালের দাম অনেক বেশি। এহন হরিরামপুর থেইক্যা তাল কিন্যা আইন্যা বেচতে হয়। আনা-নেয়ায় খরচ আছে। তবে বেচতে পারলে লাভ ভালোই অয়।’
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, দোকানের শরবতের চেয়ে তালের শাঁস অনেক ভালো। খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিতে ভরা। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তালের শাঁসে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও পানি রয়েছে। এটা সব বয়সের মানুষ খেতে পারে।