সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক চার দিন পর সিরাজগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ছয় দিন বয়সী মেয়ে শিশুকে সোমবার ভোরে উল্লাপাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়।
আশুলিয়ার নিউ মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ১৮ মে নবজাতক চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ করে। এ ঘটনায় হাসপাতালটির মালিক ও চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নবজাতক চুরি করে বিক্রির কথা স্বীকার করে। পরে ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। সোমবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, আশুলিয়ার নিউ মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তফা কামাল ও আবু হানিফ, মার্কেটিং অফিসার হানিফ বিন কুতুব ও সুমন মিয়া এবং নবজাতক ক্রেতা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার নতুন দাতপুর গ্রামের অয়জুল হক।
শিশুটির বাবা আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে জানান, ‘১৭ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংহপুর এলাকার ওই হাসপাতালে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী শিখা খাতুনকে ভর্তি করান। পরদিন ভোরে স্বাভাবিকভাবে তার স্ত্রী একটি মেয়ে শিশুর জন্ম দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই দিন রাত ১০টার দিকে হাসপাতালের মালিক মোস্তফা ও আবু হানিফ আমার স্ত্রীকে জানান, আমার মেয়ে অসুস্থ্ ও ত্রুটিপূর্ণভাবে জন্ম নিয়েছে। শিশুটি দুই-তিন দিনের মধ্যে মারা যাবে জানিয়ে মেয়েকে তার মায়ের কাছ থেকে নিয়ে যান।
‘পরে মেয়েকে চাইলে তারা নানান তালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে জানতে পারি আমার সন্তানকে চুরি করে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে তারা। উপায় না পেয়ে আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের মালিক ও ডাক্তারসহ চারজনকে আটক করা হয়। পরে তারা ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রির কথা স্বীকার করেন।’
তিনি আরও জানান, আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে উল্লাপাড়া থানার নতুন দাতপুর এলাকার অয়জুল হক নামের ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অয়জুল হক ও হাসপাতালের মালিকসহ গ্রেপ্তার পাঁচ জনকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআই এমদাদুল হক আরও জানান, ওই হাসপাতালটি মূলত অনুমোদনহীন। তদন্তের সময়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাদের বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’