খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান সিলেটের। পাশেই দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল অঞ্চল চেরাপুঞ্জি। ‘বৃষ্টির শহর’ সিলেটে এবার রেকর্ড হলো গরমের। অন্য বছর এ সময় বৃষ্টি লেগে থাকলেও এই মে মাসেই ১৫ বছরের রেকর্ড ভাঙল সিলেট।
এবার আবহাওয়ার পুরো উল্টো চিত্র। মে মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টি হলেও গত তিন দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। বরং গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম ছিল রোববার।
আবহাওয়া অফিস বলছে, গত ১৫ বছরের মধ্যে সিলেটে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল রোববার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, রোববার সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০০৬ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০০৬ সালের পর কখনোই মে মাসে সিলেটে এত বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হয়নি।
সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটে মে মাসে সাধারণত বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আর তাপদাহ বেশি থাকে এপ্রিল ও আগস্টে। তবে এবার ব্যতিক্রম। এবার মে মাসে বৃষ্টির বদলে তীব্র গরম।
তার মতে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এই গরমের উৎপত্তি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সব জায়গার জলীয়বাষ্প টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে এবং তাপমাত্রাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, সাধারণত এই মাসে হালকা বৃষ্টি হয়, যার জন্য তাপমাত্রা কম থাকে। তবে এবার বৃষ্টিপাত অনেক কম হয়েছে। তাই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এপ্রিলে ৩৭ দশমিক ৫ পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। রোববার ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এই তাপমাত্রা আরও দুই-তিন দিন থাকবে। বৃষ্টি হবে ঘূর্ণিঝড়ের পর।
আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে বৃষ্টি। ২৬ মের পরে হালকা বৃষ্টি এবং ২৯ বা ৩০ মে নাগাদ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি পেলে বৃষ্টির সম্ভাব্য তারিখ আরও এগিয়ে যাবে।
এদিকে, তীব্র গরমের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমে নগরে যান চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।