বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আমরা সরকারি দল, কাজ ইচ্ছামতো করব’

  •    
  • ২৩ মে, ২০২১ ২১:৩৮

‘নির্মাণকাজ সঠিকভাবেই হচ্ছে। ১ নম্বর ইটের এখানে কোনো দরকার নেই। আমাদের কাজ আমরা ইচ্ছামতো করব, আপনারা নিউজ করেন।’

‘আমরা সরকারি দল। আমাদের কাজ আমরাই করব। যেভাবে খুশি সেভাবেই করব। আপনারা নিউজ করেন, সমস্যা নেই।’

কথাগুলো পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান ডাব্লিউ কাজীর।

উপজেলার পানিনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নয়নে প্রায় এক কিলোমিটার আরসিসি পাকা ড্রেন নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এভাবেই নিজের অবস্থান জানান তিনি।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানায়, উপশহরের পানিনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নয়নে ৮৪০ মিটার আরসিসি পাকা ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা সদরের টিঅ্যান্ডটি ভবন থেকে তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা হয়ে গবরা সেতু পর্যন্ত এ ড্রেন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

দরপত্র অনুযায়ী, এই কাজের ঠিকাদার নীলফামারীর জলঢাকার মেসার্স রবিউল ইসলাম। তবে তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে কাজটি নিজেই করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এ নির্মাণ শেষ করার কথা ছিল। তবে ১ জানুয়ারি শুরুর পর করোনা মহামারির কারণে অর্ধেক কাজ করেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়। চলতি বছরের জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার নির্দেশ পেয়ে এপ্রিলে আবার কাজ শুরু হয়।

ড্রেন নির্মাণে ব্যবহার করা ইট, যেগুলো সাজিয়ে রাখার সময়ই বেশ কিছু ভেঙে যায়। ছবি: নিউজবাংলা

অভিযোগ উঠেছে, কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।

মাহমুদুরই কাজটি করছেন- নিশ্চিত করে এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শাহেদ আহাম্মেদ বলেন, ‘কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছিল। আমি তাৎক্ষণিকভাবে খতিয়ে দেখেছি। বর্তমানে সঠিকভাবেই কাজ চলছে।’

নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইট কোনো গ্রেডেই পড়ে না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘১ নম্বর ইট ছাড়া সোলিং গ্রহণযোগ্য নয়। যেহেতু আপনি বললেন, আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি।’

উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুরের বক্তব্য, কাজ ঠিকমতোই চলছে। এ কাজে ১ নম্বর ইট ব্যবহারের কোনো দরকার নেই।

নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর বিষয়ে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘নির্মাণকাজ সঠিকভাবেই হচ্ছে। ১ নম্বর ইটের এখানে কোনো দরকার নেই। আমাদের কাজ আমরা ইচ্ছামতো করব, আপনারা নিউজ করেন।’

এ বিষয়ে উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এমদাদুল হক অভিযোগ করেন, উপজেলায় উন্নয়নমূলক সব কাজে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন মাহমুদুর। উপজেলা চেয়ারম্যানের পাশাপাশি দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তাকে কোথাও জবাবদিহি করতে হয় না। এ কারণে নিজের ইচ্ছামতো কাজে অনিয়ম করছেন।

এতে উপজেলায় দলের ভাবমূর্তি শূন্যের কোঠায় নেমেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

উপজেলার আজিজ নগর গ্রামের ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী জুয়েলের অভিযোগ, মাহমুদুর রহমান নির্মাণকাজে সীমাহীন দুর্নীতি করে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছেন। তার দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা দলীয় ভাবমূর্তিকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, দেশের সর্বউত্তরের এ পর্যটন নগরী উন্নয়ন-অগ্রগতিতে পিছিয়ে রয়েছে। পর্যটনের কথা বিবেচনা করে সরকার এরই মধ্যে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নিয়েছে। তবে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে সেখান থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ায় তৈরি হচ্ছে জটিলতা।

এ বিভাগের আরো খবর