চার জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নাটোর দুইজন, পাবনায় দুইজন, কুমিল্লায় একজন ও কুড়িগ্রামে প্রাণ হারিয়েছেন একজন। আহত হয়েছেন আরও সাতজন।
নাটোরে মাছবাহী নছিমন উল্টে পথচারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।
সদর উপজেলার চকআমহাটি গ্রামে রোববার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন নছিমন চালক মিজানুর রহমান ও পথচারী বাচ্চু সরদার। মিজানুরের বাড়ি নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর গ্রামে। বাচ্চু চকআমহাটি গ্রামের বাসিন্দা।
সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন জানান, মিজানুর শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমন গাড়িতে করে মাছ নিয়ে শহরের আড়তে যাচ্ছিলেন।
পথে চকআমহাটি এলাকায় পৌঁছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নছিমনটি উল্টে যায়। এতে বাচ্চু ও মিজানুর গুরুতর আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর ও বাচ্চু মারা যান।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রাক ও অটোরিকশা সংঘর্ষে সালাম হোসেন সেলু ও আলমগীর হোসেন নামে দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় অটোরিকশায় থাকা আরও তিনযাত্রী গুরুতর আহত হন।
উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়রে সরাইকান্দিতে রোববার দুপুর আড়াই টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সালাম হোসেন সেলু নাটোরের রাজাপুর পূর্ব কলস কাঁচারিপাড়ার বাসিন্দা।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রাক ও অটোরিকশা সংঘর্ষে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা
পাকশী হাইওয়ে থানা পুলিশ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, মুলাডুলিরগামী ট্রাকের সঙ্গে ওই এলাকায় একটি অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সালাম নিহত হন। আহত হন আরও ৪ জন। তাদের ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এসময় ড্রাইভার আলমগীরের অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
কুমিল্লার চান্দিনায় মোটরসাইকেল-আটোরিকশার সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
চান্দিনায় মাধাইয়া-নবাবপুর সড়কে গজারিয়া স্টেশনের পাশে রোববার দুপুর দেড়টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মাজহারুল ইসলামের বাড়ি চান্দিনায়।
কুমিল্লার চান্দিনায় মোটরসাইকেল-আটোরিকশার সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা
চান্দিনা থানার পরিদর্শক (এসআই) নোমান জানান, দুপুর দেড়টায় মাজহারুল মোটরবাইক নিয়ে মাধাইয়া যাচ্ছিলেন। এ সময় নবাবপুরগামী এক আটোরিকশার সঙ্গে তার বাইকের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মাজহারুল।
দুর্ঘটনা কবলিত আটোরিকশা ও মোটরসাইকেল জব্দ করে চান্দিনা থানায় নেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বালু ভর্তি ট্রাক্টরের চাপায় সাদেকুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
উপজেলার সদর ইউনিয়নে রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের মির্জাপাড়ায় রোববার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সাদেকুল ইসলামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হাটুভাঙা এলাকায়। আহতরা হলেন, লাল মিয়া, সবুজ মিয়া ও লালচাঁন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রৌমারী থেকে ছেড়ে আসা দুটি বালু বোঝাই ট্রাকটর পাল্লা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোভ্যানকে চাপা দিয়ে একটি ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গর্তে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে অটোভ্যানের যাত্রী সাদেকুল নিহত হন। এ সময় ভ্যানচালক ও ট্রাকটরের হেলপারসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ওসি আরও বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাদেকুলের মৃত্যু হয়েছে। রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন তিনজনের অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি বলে জানান ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ।
প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিউজবাংলার নাটোর প্রতিনিধি নাজমুল হাসান, পাবনা প্রতিনিধি ইমরোজ খন্দকার বাপ্পি, কুমিল্লা প্রতিনিধি মাহফুজ নানটু ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন।