মানিকগঞ্জে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বসেছে শ্রমিকের হাট। সকাল-সন্ধ্যা ভিড় এখানে।
কাজের খোঁজে এখানে ছুটে আসেন শ্রমিকরা। বছরের অন্য সময় শ্রমিক কম থাকলেও, বোরো মৌসুমে বাড়ে শ্রমিকের সংখ্যা। যদিও শ্রমিকের মজুরি নিয়ে দেখা যায় বিপত্তি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ জেলায় এ বছর ৪৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার ৭৯০ টন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের ট্রাফিক বক্সের পূর্ব পাশে শ্রমিকের হাট বসছে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা বসে এই হাট। শ্রমিকের হাটে পাবনা, গাইবান্দা, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শ্রমিকরা আসেন মানিকগঞ্জে।
কৃষকরা এসে এখান থেকে শ্রমিক ভাড়া করে নিয়ে যান বাড়িতে। দিনে ৫৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায় বায়না হয় একেক শ্রমিকের।
কৃষকরা জানান, চলিত মাসের শুরুতে বোরো ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এখনও অনেক জমির ধান আধা পাকা রয়েছে।
তবে পাকা ধান কাটতে কাটতে আধা পাকা ধানগুলোও পেকে যাবে। তা ছাড়া ঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় অনেকে ধান কাটতে শুরু করেছেন।
মানিকগঞ্জ সদরের প্যাঁচারকান্দা গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন,‘আমার দুইটা কৃষি প্রকল্প আছে। এই প্রকল্পের অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। তাই শ্রমিক নিতে হাটে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি শ্রমিকের মজুরি বেশি। তাই বাধ্য হয়ে বেশি মজুরিতে ১২ জন শ্রমিক নিতে হলো।’
সদরের কৃষ্ণপুর গ্রামের হাদিম মিয়া জানান, একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০ টাকা। তাকে আবার তিন বেলা খাবার দিতে হয়। এতে একজন শ্রমিকের পেছনে ৯০০ টাকার মতো খরচ হয়। দাম বেশি হলেও নিতে হয়। কারণ জমির ধান তো কাটতে হবে। সময় মতো ধান কাটতে না পারলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ বছর চার বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করছি। ফলনও ভালো হয়েছে। ধানও পেকে গেছে। আশপাশের জমির ধান এখনও পাকে নাই। এ কারণে জমিতে ধান কাটার মেশিন যাই নাই। আবার শুনতেছি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। তাই ৬০০ টাকা করে চারজন শ্রমিক নিলাম ধান কাটার জন্য।’
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জের একাধিক শ্রমিক জানান, তাদের এলাকায় বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। তাই ধান কাটার জন্য মানিকগঞ্জে এসেছেন। হাটে কৃষকরা আসেন। তাদের সঙ্গে দামে মিললে চলে যান।
তারা আরও জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করা লাগে। ধান কাটা অনেক কষ্টের কাজ।