চট্টগ্রামে মিতু হত্যাকাণ্ডে নতুন মামলার আসামি কারাবন্দি শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফীউদ্দিনের আদালত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আদেশ দেন।
এর আগে মিতু হত্যায় বাবুল আকতারের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন শাহজাহান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, 'মিতু হত্যার নতুন মামলায় কারাগারে থাকা আসামি শাহজাহানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।'
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় আসামি শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য মঙ্গলবার আবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) সন্তোষ কুমার চাকমা।
সন্তোষ কুমার চাকমা নিউজবাংলাকে জানান, মিতু হত্যার আগের মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ারকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দিয়েছে আদালত।
শাহজাহানকেও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই মিতুর স্বামী বাবুল আকতারের করা মামলায় শাহজাহান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
এদিকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার দুপুরে মহানগর হাকিম সরোয়ার জাহানের আদালতে তোলা হয়। সেখানে বাবুল জবানবন্দি দিতে রাজি না হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। সে সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল আকতার।
হত্যার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে তিনি মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
এ মামলায় সেই বছরের ২৬ জুন মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর এই হত্যায় বাবুলের সম্পৃক্ততা নিয়ে গণমাধ্যমে নানা তথ্য উঠে আসে। তবে তদন্ত আর এগোয়নি। একপর্যায়ে বাবুল পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অব্যাহতি নিতে তাকে বাধ্য করা হয়।
বাবুল দোষী হলে তাকে গ্রেপ্তার না করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সে সময়ই প্রশ্ন ওঠে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা আর দেয়া হয়নি।
তবে পাঁচ বছর পর এবার ঈদের আগে চমক দেখায় পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই। হঠাৎ বাবুলকে ঢাকা থেকে ডেকে নেয়া হয় চট্টগ্রাম। মিতুর বাবাকেও নেয়া হয়।
পিবিআই বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এর পরেই বাবুলকে আসামি করে মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।
১২ মে পাঁচলাইশ থানায় করা মামলায় বলা হয়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে।
সেদিনই বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে রিমান্ডে পাঠান।
এ মামলার আসামি আরও সাতজন। এর মধ্যে ২ নম্বর আসামি মুসা, ৩ নম্বর আসামি এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়্যা ও ৬ নম্বর আসামি খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে কসাই কালু পলাতক।