বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সড়কে চলছে ‘গর্ত সংস্কার’, উল্টে যাচ্ছে যানবাহন

  •    
  • ১৮ মে, ২০২১ ০৮:৪৫

এলজিইডির রক্ষণাবেক্ষণ ফান্ড থেকে বড় বড় গর্তগুলোর মেরামতকাজ করা হচ্ছে। মূল সড়ক ঠিক করতে এখন এডিবির অনুমতি লাগবে। নতুন টেন্ডারের পর রাস্তার কাজ শুরু করা যাবে।

কুষ্টিয়ার লাহিনী-সান্দিয়ারা সড়কের সংস্কারকাজে ‘উপকার’ পাচ্ছেন না লোকজন। নষ্ট সড়কের বেহাল দশা কাটাতে চলছে মাটি, বালু ও খোয়া দিয়ে গর্ত ভরাটের চেষ্টা। কিন্তু তাও বৃথা যাচ্ছে নানা কারণে।

ধুলাবালিতে একাকার হয়ে থাকা সড়কে বৃষ্টির পানি জমলেই হয়ে উঠছে কর্দমাক্ত। খানাখন্দে পড়ে উল্টে যাচ্ছে অটোরিকশাসহ যানবাহন। স্বল্প বাজেটে সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হচ্ছে।

এলাকার লোকজন জানান, কুষ্টিয়া শহরতলির লাহিনী থেকে কুমারখালী উপজেলার সান্দিয়ারা পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার সড়ক তিন বছর ধরে একেবারে বেহাল। এ সড়কটি মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার লাঙ্গলবন্ধ পর্যন্ত গেছে। প্রায় ১২ লাখ মানুষ এই সড়কের ওপর নির্ভরশীল।

বর্তমানে এই সড়কের উপরিভাগের পিচ, পাথর, ইটের আবরণ উঠে গেছে। দেখে মনে হয় রাস্তায় ইট আর বালুর মিশ্রণ বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে আবার কিছুদূর পরপরই গর্ত। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় পড়ছে অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন। মানুষ আহত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে মালামাল।

সড়কটি ঘুরে দেখা যায়, কুষ্টিয়ার লাহিনী প্রান্ত থেকে কিছুদূর এগোলেই আর সড়কের পিচ চোখে পড়ে না। জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত। ইটের রঙের মতো লালচে ধুলা ছড়িয়ে আছে সড়কজুড়ে। যানবাহন গেলেই ধুলা উড়ে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের উত্তর পাড়ের ওপর দিয়ে নির্মাণ করা এই সড়ক নিয়ে বিস্তর অভিযোগ এলাকারবাসীর।

অটোরিকশা চালক মো. রাকিব বলেন, ‘এই রোডে আমাদের খুবই সমস্যা, যাত্রী নিয়ে যখন যাই উল্টে পড়ে। যেখানে গর্ত ছিল সেখানে সংস্কারের নামে ইট ফেলে দিয়ে চলে গেছে।’

অটোরিকশাচালক খবির উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে, কেউ ঠিক করছে না। রাস্তা যদি কোনোমতে সমান করে দিত তাহলেও আমরা চলতে পারতাম।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাত্তার বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও ইট-বালু ফেলতে দেখা গেছে। কিছুটা সমান হয়েছিল, আবার যা তা-ই হয়ে গেছে। সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী।’

বহলা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘একটানা চার কিলোমিটার রাস্তা ভাঙা। তারপর কিছুটা ভালো, আবার ভাঙা। এ পথে চলতে গিয়ে মানুষসহ উল্টে পড়ছে রিকশা-ভ্যান ও ছোট যানবাহন।’

লাহিনীর বাসিন্দা আফরিন সাগর বলেন, ‘রাস্তা একেবারেই ভাঙা। সব মিলিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে জীবন দুর্বিষহ। মাস্ক ছাড়া এই রাস্তায় যাওয়াই যায় না। মাঝেমধ্যেই মোটরসাইকেল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

কুমারখালী চাপড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির হাসান রিন্টু বলেন, ‘এভাবে রাস্তা মেরামত করে লাভ হচ্ছে না, নতুন করে নির্মাণ করা দরকার। যে সংস্কারকাজ হচ্ছে, তা শুধুই টাকা নষ্ট।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান মণ্ডল জানান, সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য কাজ পেয়েছিল রাফিয়া কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। কুমারখালীর লাহিনী-সান্দিয়ারার ১৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং সদরের বিত্তিপাড়া-জমজমির ১৭ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য তাদের কার্যাদেশ দেয়া হয়। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে মোট ৩০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়।

২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাদের কাজ শুরুর কথা ছিল। অল্প কিছু কাজ করতেই করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় এলজিইডি আগের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন টেন্ডারের অনুমোদন চেয়ে এডিবিকে চিঠি দিয়েছে। এডিবি থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই আবার নতুন টেন্ডারের মাধমে কাজ শুরু করা যাবে।

সড়কের বর্তমান হাল প্রসঙ্গে প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তি বিবেচনায় ভ্রাম্যমাণ রক্ষণাবেক্ষণ ফান্ড থেকে বড়বড় গর্তগুলোর মেরামতকাজ করা হচ্ছে। নতুন টেন্ডার না করা পর্যন্ত এর বাইরে কিছু করা সম্ভব না।’

এ বিভাগের আরো খবর