নওগাঁর রাজমিস্ত্রি আলমগীর হোসেন ওরফে আলম হত্যা মামলায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, সাত মাস আগের ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার আরিফ আকন্দই মামলার প্রকৃত আসামি। কথা-কাটাকাটির জেরে আলমকে ছুরিকাঘাতে করেছিলেন তিনি। দুজনের বয়সেই ছিল ৩০ বছর। কিন্তু ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আরিফকে বাদ দিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে অন্যদের আসামি করে মামলা করেন আলমের বোন।
নওগাঁ সদর মডেল থানা-পুলিশ রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শহরের পার-নওগাঁ মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে আরিফকে আটক করে বলে সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে জানান নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া।
পুলিশ সুপার মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার, একেএম মামুন চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু সাঈদ, নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ নভেম্বর শহরের পার-নওগাঁ বউবাজার মহল্লায় রাস্তায় পাশে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আলমগীর হোসেন ওরফে আলমকে ছুরিকাঘাত করেন আরিফ আকন্দ। এতে আহত আলম তার মোবাইল ফোন ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান।
পরে আলমকে তার আত্মীয়স্বজন চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ নভেম্বর মারা যান তিনি।
এ ঘটনা এর আগে আলমের বড় বোন রেশমা বেগম বাদী হয়ে ১৮ নভেম্বর নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। পূর্বশত্রুতার জেরে এ হামলা হয়েছে উল্লেখ করে আসামি করেন মো. জামিরুল ইসলাম ও মো. রুবেল হোসেনকে। এ ছাড়া অপরিচিত তিনজনকে আসামি করা হয় মামলায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আলম পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। আটক আরিফ এলাকার বখাটে হিসেবে পরিচিত। কিছু দিন হলো একটি দোকানে স্টিলের আসবাব তৈরির কাজ করছিলেন তিনি।
আলমের ফেলে যাওয়া ফোনের সূত্র ধরে প্রথমে রুবেল হোসেনকে আটক করে পুলিশ। পরে জাহাঙ্গীর নামে অরেকজনকেও আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রকৃত আসামি আরিফকে রোববার ভোরে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, খুনের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বাদী প্রকৃত আসামিকে বাদ দিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে অন্যদের আসামি করে মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করে খুনের প্রকৃত আসামি আরিফকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আরিফকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।