বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পেডের জ্বালাই মেঘের মধ্যেও রিকশা চালাই’

  •    
  • ১৭ মে, ২০২১ ২০:৫১

‘নেতারা ভোটের সময় আইয়্যা মাথা আতায়্যা ভোট চায়। নির্বাচন গেলে আর খবর নেয় না। আমগর জীবনডাই কষ্টের। আমগর খবর কেউ রাহে না। হডাৎ পাঁচ ট্যাহা ভাড়া বেশি চাইলেই যাত্রীরা রিকশায় উডে না। আমগর কষ্ট কেউ বুঝনা।’

ময়মনসিংহে বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে শেষ হয় সোয়া ছয়টার দিকে। এর মধ্যে বহু রিকশাচালককে ভিজেই যাত্রী নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।

রিকশার সামনের খোলা অংশে প্লাস্টিকের পর্দা দিয়ে যাত্রীদের ঢেকে দিলেও বেশ কয়েকজন চালকের শরীরে কোনো আবরণ ছিল না। ফলে জীবিকার তাগিদে ভিজিয়েই চালিয়েছেন রিকশা।

সোমবার বিকেল পৌনে ছয়টার থেকে নগরীর বাঘমারা ও চরপাড়া এলাকায় রিকশাতে বসে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

বৃষ্টি থেমে গেছে। নগরীর চরপাড়া (মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল) সড়কে ডানে-বামে তাকিয়ে যাত্রী খোঁজাখুঁজি করছেন এক চালক। যাত্রী না পেয়ে আস্তে করে থামিয়ে রাখেন রিকশাটি।

এ সময় কথা হয় রিকশাচালকের সঙ্গে। তার নাম মোরশেদ। গ্রামের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলায় ভাংনামারী ইউনিয়নে। প্রতিদিন সকালে শহরে এসে ভাড়া নেয়া রিকশাটি সারাদিন চালান তিনি।

মাঝে মাঝে রাত আটটা পর্যন্তও চালান। এর জন্য মহাজনকে প্রতিদিন তিনশ টাকা ভাড়া দেন।

এতক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা চালিয়েছেন নাকি? জিজ্ঞেস করতেই মোরশেদ বলেন, ‘ভারি মেঘের সময় চালাইছি না। মেঘ যহন থামতাছিন তহন যাত্রী পাইছিলাম। যাত্রী লয়্যা যাওয়ার সময় ছিডা ছিডা মেঘে ভিজ্জা গেছি। মাথার গামছাডা দিয়া মেঘের পানি মুচছি।

‘কী করবাম, পেডের জ্বালাতে ঝড় তুফানের মধ্যেও মাঝে মাঝে রিকশা চালাই। তবুও আইজক্যা কম ভিজছি। হেইদিনের মেঘে ভিজ্জা জ্বর উইট্টা পড়ছিন।’

তিনি বলেন, ‘রিকশাডা মহাজনের কাছ থাইক্যা ভাড়া নিছি। হারাদিন চালায়্যা তিনশ ট্যাহা ভাড়া দেই। তবুও মহাজন নাক আঙ্গাইয়া রাহে। খালি বলে আরও পঞ্চাশ ট্যাহা বাড়ায়্যা দিও।

রিকশাচালক মোরশেদ আবেগাপ্লুত হয়ে বলতে থাকেন, ‘নেতারা ভোটের সময় আইয়্যা মাথা আতায়্যা ভোট চায়। নির্বাচন গেলে আর খবর নেয় না। আমগর জীবনডাই কষ্টের। আমগর খবর কেউ রাহে না। হডাৎ পাঁচ ট্যাহা ভাড়া বেশি চাইলেই যাত্রীরা রিকশায় উডে না। আমগর কষ্ট কেউ বুঝনা।’

চারপাড়ায় রিকশাতে ওঠার আগ মুহূর্তে কথা হয় আবু ওহাব ও শামীম আহম্মেদ নামে দুইজনের সঙ্গে। তারা বলেন, এই সড়কের পাশেই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। আর তাই রোগী নিয়ে স্বজনরা সবসময় রিকশা কিংবা অটোরিকশা খুঁজে। ফলে এখানে রিকশার চাপ বেশি।

তবে যখন দেখি বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চলাচ্ছে তখন মনে কষ্ট লাগে। রিকশাচালকসহ শ্রমজীবী মানুষদের সঙ্গে সবার ভালো আচরণ করা প্রয়োজন।

এ বিভাগের আরো খবর