রাজধানীতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন নাজমা খাতুন। ঈদের ছুটিতে সাত বছরের মেয়ে লালমনিকে নিয়ে শেরপুর সদরের বাঘেরচরে বাবার বাড়িতে গিয়েছিলেন। ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকা ফিরছিলেন তিনি। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ভাইয়ের সঙ্গে উঠেছিলেন বেগুনবোঝাই পিকআপ ভ্যানে। সড়ক দুর্ঘটনায় ভাই ও মেয়েসহ প্রাণ গেল তার।
ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে, রোববার গভীর রাতে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের রায়মনি এলাকায় যায়। রাস্তার পাশে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া পিকআপ ভ্যান ও চারজনকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। এর মধ্যে শিশুসহ তিনজনকে পাওয়া যায় মৃত অবস্থায়।
আহত অবস্থায় পিকআপচালক সাদা মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি জানান, নিহতরা হলেন নাজমা খাতুন, তার মেয়ে লালমনি ও ভাই আমিনুল ইসলাম আমানু। তারা শেরপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন।
ত্রিশাল ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মুনিম সারোয়ার বলেন, ‘অতিরিক্ত গতিতে ছিল পিকআপ ভ্যানটি। রাতের কোনো এক সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা কোনো ভারী যানে ধাক্কা দেয়। এতে দুর্ঘটনাটি ঘটে।’
ওসি মাইন বলেন, পিকআপের সামনের অংশ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে কোনো ট্রাকে এটি ধাক্কা লেগেছে।
নিহত নাজমার চাচা মোশাররফ হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, আমান কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। এলাকা থেকে কাঁচামাল কিনে তিনি ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করতেন। তাই ঢাকায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
মোশাররফ জানান, রোববার রাতেও বেগুন নিয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আমান। নাজমার ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় কাজে যোগ দিতে ঢাকা ফেরার তাড়া ছিল। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে পিকআপে চড়েই তিনি রওনা দেন। পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তিনজনেরই।