নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় জাল চুরির অভিযোগে পাঁচ কিশোরকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিশোরদের সালিশ করে সাজা দেয়া চার মাতুব্বরকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ায়।
আটক চারজন হলেন জেলেপাড়ার মাতুব্বর শ্রীহরি জলদাস, নেপাল চন্দ্র জলদাস, বিধান চন্দ্র জলদাস ও রায় মেহেন জলদাস।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলেপাড়ায় সালিশে কিশোর জেলেদের দড়িতে বেঁধে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে জেলা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জেলেপাড়ার নারী-পুরুষের সামনে ৫ কিশোরকে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। এ সময় ওই পাঁচ কিশোর ও তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা আহাজারি করে তাদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। কান্নারত নারীরা এগিয়ে এলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়।
চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কয়েক দিন আগে ৫ কিশোর মিলে এক জেলের একটি বিন্দি জাল চুরি করে পাশের সোনাদিয়া ইউনিয়নের এক জেলের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ওই জাল উদ্ধার করে শনিবার বিকেলে মালিককে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে জেলেপাড়ার মাতুব্বর শ্রীহরি দলদাস, নেপাল চন্দ জলদাস, প্রিয় লাল জলদাস বিধান চন্দ জলদাস, মরায় মোহন জলদাসের নেতৃত্বে একটি সালিশি বৈঠক বসে। ওই সালিশে পাঁচ কিশোরের প্রত্যেককে ১০টি করে বেত মারার আদেশ দেয়া হয়। তাদের ২ হাজার করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
পরে জেলেপাড়ার মাতুব্বরদের নির্দেশে কিশোরদের বেঁধে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান চৌকিদার আমির হোসেন।
ওসি আরও জানান, ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে মাতুব্বরদের থানায় গিয়ে কথা বলতে বলা হয়। রাতে তারা থানায় এলে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।