বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুর্নীতির অভিযোগে মজুরি বন্ধ, ৩৩৬ পরিবারের ঈদ মাটি

  •    
  • ১৪ মে, ২০২১ ২০:১১

ইউএনও নূরে তাসনিম বলেন, তদন্তাধীন অবস্থায় বিল হবে না। প্রতিবেদন পেলে বিল দেব। এ ছাড়াও মজুরি না পাওয়ায় ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন,কেউ যদি এমন দুস্থ থাকে তাহলে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৪০ দিনের মাটি কাটার কাজ করেন রতিকানি পাড়ার ষাটোর্ধ্ব মমিনা বেওয়া। দিন ২০০ টাকা করে আট হাজার টাকা পাওয়ার কথা তার।

আশা ছিল, ঈদের আগেই হাতে টাকা আসবে। নতুন কাপড় আর মাংস কিনবেন। কিন্তু তার এই আশা আর পূরণ হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সরকারি বিল গেছে আটকে।

এখন নতুন কাপড় তো দূরের কথা, স্বামী হারানো এই নারীর দিনে একবার ভাত জোটানোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একই দশা রতিসোলাগাড়ি পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা রাহিয়া বেওয়ারও। তিস্তা নদীর ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়ে সরকারি তীর রক্ষা বাঁধেই কোনো রকমে পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে থাকেন তিনি।

রাহিয়া বেওয়া এবং তার মেয়ে ইসোয়ারা বেগম এই মাটি কাটার কাজ করে সংসার চালান। মজুরি না পেয়ে ধারদেনা করে দিন পার হচ্ছে তাদের। একই দুর্দশায় ঈদ পার করছেন বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৪০ দিন কর্মসূচির বাকি শ্রমিকরাও।

রাহিয়া বেওয়া এবার ঈদ করছেন ধার-কর্য করে। ছবি: নিউজবাংলা

কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ৪০ দিনের মাটিকাটা কর্মসূচি, ভিজিডি, বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার একরামুল হকের বিরুদ্ধে। গেল সোমবার তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন একই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, লিখিত অভিযোগ থাকায় তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আর এই অভিযোগের কারণে ৩৩৬টি পরিবার মাটি কাটার পর কাজের মজুরি পায়নি। ইউনিয়নে দ্বিতীয় পর্যায়ের ৪০দিনের মাটিকাটা কর্মসূচির শুরু হয় ১৩ এপ্রিল।

শ্রমিক মমিনা বেওয়া বলেন, ‘৪০দিনের কামকাজ করি। তারতো টাকা এলাও দেয় নাই। এই যে ঈদ আসিল কী দিয়া খরচপাতি করি খামো। বেডা-বউয়েরা আছে। তাগরে চলে না। আমাক দিবে কডে হতে। এই যে ঈদ আসিল এক পোয়া নুন, এক পোয়া গোস্ত আনি খাবার পাবা নই। কীভাবে চলমো। শখ ছিল টাকা পায়া নতুন কাপড় কিনমো।’

শ্রমিক রাহিয়া বেওয়া বলেন, ‘টাকা না পাওয়ায় করজ বরজ করি চলা লাগবে। ইয়ার উত্তি থাকি আনিয়া ছোয়ার খরক খোয়ামো। কী করমো এলা? কাম কচ্ছি টাকা দেইল না। ঈদের পরে নাকি টাকা দিব।’

মাটিকাটা শ্রমিকদের সরদার আমিনুর ইসলাম বলেন, বিল ভাউচার সব ঠিকঠাক হইছে। বরাদ্দ আসছে। অভিযোগের কারণে মজুরি না পাওয়ায় মানবেতরভাবে ঈদ পার করতে হচ্ছে।

৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আবুল কালাম আজাদ লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘মেম্বার ও মাটিকাটার সরদার জাল সই দিয়ে বিলগুলোর টাকা তুলে আত্মসাৎ করছে। এ ছাড়াও ভিজিডি, বয়স্ক এবং বিধবা ভাতাতেও রয়েছে অনিয়ম। এগুলো নিয়ে সোমবার ১০মে উপজেলায় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।’

প্রতিহিংসামূলকভাবে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি ।

তবে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বর্তমান মেম্বার একরামুল হক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, সামনে ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনের আগে মাঠ নষ্ট করতে অপপ্রচার চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে তাসনিম বলেন, তদন্তাধীন অবস্থায় এটা বিল হবে না। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিল দেব।

মজুরি না পাওয়ায় ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি এমন দুস্থ থাকে তাহলে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর