বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই নদীর মাঝখানে দুর্ভোগে সাত গ্রাম

  •    
  • ১৪ মে, ২০২১ ০৯:৩০

কীর্তনখোলা আর আড়িয়াল খাঁ নদীর মাঝখানে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় প্রতি বর্ষায়। দুই নদী এক হয়ে যায়। একটা রাস্তার অভাবে তাদের জীবিকা টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে গেছে।

ষাটোর্ধ্ব বরকত আলী থাকেন বরিশাল সদর উপজেলা চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচরী গ্রামে। কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনে পৈতৃক ভিটা বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। এখন জমি কিনে থাকছেন সেই গ্রামেই। কিন্তু ভাঙন পিছু ছাড়ছে না তার। পরিবার নিয়ে রয়েছেন প্রতিনিয়ত নদীভাঙনের আতঙ্কে।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দুই নদীর মাঝখানে থাহি মোরা। প্রতি বর্ষার সিজনেই মোরা আতঙ্কে থাহি। কোন সময় আবার ভাঙন শুরু হয়। অনেক বছর ধইরা তো ঝামেলা আরও বাড়ছে। মোগো আশপাশের কয়েকটা গ্রামসহ মোরা আলাদা হইয়া যাই পুরা ইউনিয়ন দিয়া। তহন যে কী দুর্ভোগে পড়তে হয়, হেয়া আল্লাহ মাবুদ ছাড়া কেউ জানে না।'

প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পাশেই থাকা আড়িয়াল খাঁ নদের সাথে মিশে যায় কীর্তনখোলা। এ সময় শহরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এই ইউনিয়নের আটটি গ্রাম।

কয়েক বছর আগে মূল সড়ক বিলীন হয়েছে কীর্তনখোলা নদীগর্ভে। পরে পার্শ্ববর্তী একটি ইটভাটার মালিক নিজ অর্থায়ন ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পাশ দিয়ে আরেকটি সড়ক তৈরি করেন। তবে সেই সড়কেরও নাজেহাল অবস্থা। সারা বছর সড়ক যোগাযোগ চালু থাকলেও বর্ষা মৌসুমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এই যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বরিশাল নগরীর বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন চরবাড়িয়ার লামচরী এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘মূল সমস্যায় রয়েছেন লামচরী, উত্তর লামচরী, দক্ষিণ লামচরী, চরকান্দা, পোটকারচর, ময়দান ও কদমতলা গ্রামের বাসিন্দারা। এসব গ্রামের ১০ হাজার পরিবার দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। অনেকের ভিটেমাটি চলে গেছে নদীগর্ভে।

‘নদীভাঙন থেকে রক্ষায় অনেক আবেদন করা হয়েছে। কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সামনে বর্ষা মৌসুম। দুই বছর যাবৎ এই মৌসুমে বাড়ি যেতে পারিনি। মোটরসাইকেল নিয়ে এই সিজনে বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করে অফিস করা সম্ভব নয়। জোয়ারের সময় কোনো রাস্তাই থাকে না। দুই নদী এক হয়ে যায়। যারা এই এলাকার চাকরিজীবী, মানে যারা শহরে চাকরি করেন, তারা দুর্ভোগে পড়েন। দুই পাশে থাকা দুই নদী রাক্ষুসে চরিত্রের। বর্ষাকালে নদী গ্রাস করতে থাকে ভিটেমাটি।’

এলাকাবাসী জানান, এখানে ভাঙনের হুমকিতে আছে লামচরীর দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের বাড়ি ও ও তার স্মৃতিবিজড়িত লাইব্রেরি।

বরিশাল নগরীর বাজার রোডে চাকরিরত চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চরকান্দা গ্রামের নজরুল হোসেন বলেন, ‘বর্ষাকালে এমন অবস্থা হয় যে সাইকেল চালাইয়াও যাওয়া যায় না। আমাগো এই রাস্তার স্থায়ী সমাধান দরকার।’

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, তালতলী-লামচরী সড়কের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে কাজ শুরু হতে পারে আগস্টে। নদীভাঙন রোধ একটি বড় প্রকল্প বলে তিনি জানান। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইতিমধ্যে।

বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘স্থানীয় সাংসদ ডিও লেটার দিয়েছেন ওই সড়কের কাজের জন্য। শিগগিরই কাজ শুরু হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর