বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ছেলেমেয়েরারে এইবার ঈদের কাপড় দিতে পারছি’

  •    
  • ১৩ মে, ২০২১ ১৫:৫৯

শাহ ফজলুল হক বলেন, ‘গেল কয়েক বছর ধরি তো ছেলেমেয়েরারে ভালা কিচ্ছু দিতে পারছি না। এইবার সবার লাগি কাপড় কিনছে আমার বাচ্চার মায়। সবাইরে নিয়া আমরা খুশিতে ঈদ করমু।’

হাওরের চাষিদের হাসি-কান্না ধানকে ঘিরেই। ধানের ফলনের ওপরই নির্ভর করে, কেমন যাবে তাদের পুরো বছর।

২০১৭ সালের বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওরের ধান তলিয়ে যাওয়ার পর থেকে তাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। ফলন ভালো হলেও সব ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না, এই ভাবনায় দিন পার করেন।

এ বছরের ধান কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। তাদের ঘরে ঘরে বয়ে এনেছে ঈদের আনন্দ। ধান বিক্রি পুরোদমে শুরু না হলেও ঈদ উপলক্ষে প্রিয়জনদের জন্য পোশাক কিনতে শেষ সময়েও তারা ভিড় করছেন দোকানে।

সুনামগঞ্জের দেখার হাওর ও খরচার হাওরের ধান কাটা মোটামুটি শেষ। এখন চলছে ধান শুকানোর কাজ।

এ বছর ফলনের পাশাপাশি ধানের দরও বেশ ভালো। সরকার বোরো ধানের দাম নির্ধারণ করেছে মণ প্রতি ১ হাজার ৮০ টাকা। পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায়।

সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের খরচার হাওরে ১০ কেয়ার জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন শাহ ফজলুল হক।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বছর আমরার ধান গত বছর অখলতের থাকি বেশি ভালা অইছে। আবহাওয়া ঠিক আছিল, বৃষ্টি কম অইছে। আল্লাহ দিলে আমি ধান পাইছি ১০০ মণ৷’

তিনি আরও বলেন, ‘গেল কয়েক বছর ধরি তো ছেলেমেয়েরারে ভালা কিচ্ছু দিতে পারছি না। এইবার সবার লাগি কাপড় কিনছে আমার বাচ্চার মায়। সবাইরে নিয়া আমরা খুশিতে ঈদ করমু।’

কিশোর উসমান আলীর ঈদের পোশাক কেনা শেষ। তার এখন অপেক্ষা, কবে ঈদের চাঁদ উঠেবে।

সে বলে, ‘এইবার আমরার ধান ভালা অইছে। আব্বায় টাকা দিসেন। গত বছর খালি শার্ট দিসলা। এ বছর আমারে সবতা দিসোইন নতুন কিনিয়া।’

লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের দেখার হাওরের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘ধান বিক্রি শুরু হইছে না ভালা করি। আট কেয়ার জমিত ধান করছিলাম। ৮০ মণের মতো ধান ফাইছি। আমরা সত্যিকারের খুশি অইমু ধান বেছতে পারলে। তবুও এতো বছর পরে নিজের কষ্টের ফসল ভালা অইছে এইটাই আনন্দ।

‘নতুন ধানের চাল দিয়া পিঠা খাওয়া অইবো। এরপরে ছেলেমেয়েরারে এইবার ঈদের কাপড় দিতে পারছি। সবকিছুর লাগি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’

শহরের ফুটপাতের কাপড়ের দোকান ও শপিংমলগুলো ঘুরে দেখা যায়, সব জায়গাতেই কমবেশি ভিড় আছে মানুষের।

সদরের হোসেনপুর গ্রামের আছিয়া বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। বেশি দামি জিনিস কিনার সামর্থ্য নাই। তবে আমরা আমাদের মতো করে ছোট ছোট দোকানগুলা থাকি বাজার কররাম। দাম বেশি চায় অনেক, দরদাম করিয়া লওয়া লাগে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমরা খুশি কারণ আমরার ধান খুব ভালা অইছে। ইলান যদি সব বছর অইতো তাইলে আমরা চিন্তা আর আতঙ্ক ছাড়া থাকতাম।’

পোশাক ব্যবসায়ী রনি তালুকদার জানান, এ বছর কাস্টমার কম। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় বিভিন্ন হাওর এলাকা থেকে বেশি মানুষ আসছে। লকডাউন না থাকলে ব্যবসা খুব ভালো হতো।

জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জের একমাত্র ফসল বোরো ধান কাটা শেষ। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শের ফলে আমরা সব ধান বন্যার আগেই ভালোভাবেই কাটতে পেরেছি। তাই বলা যায় এ বছর হাওরে ঈদের আনন্দ থাকবে।’

এ বিভাগের আরো খবর