ভারতের চেন্নাই থেকে ফেরা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। ভাইরাসটি করোনার ভারতীয় ধরনের কি না সেটি যাচাইয়ে নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। পাশাপাশি বাড়ি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। ওই বাড়ির সবাইকে রাখা হয়েছে আইসোলেশনে।
সেই ব্যক্তি দেশে ফেরার পর নীতিমালা অমান্য করে গোপনে এলাকায় আসেন। আর স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে স্বাস্থ্য বিভাগকে জানায়। আর স্বাস্থ্য বিভাগ তার করোনা পরীক্ষা করায়।
গত মঙ্গলবার তার নমুনা গাজী ল্যাবে পাঠানো হলে সেখানে তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। এর পর থেকে ওই ব্যক্তি আলাদা কক্ষে অবস্থান করছেন।
ওই বাড়িতে তার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, বড় ভাইয়ের স্ত্রী, ভাতিজা-ভাতিজি বসবাস করেন।
বুধবার সকালে ২৭ বছর বয়সী ওই যুবকের বাড়ি লকডাউন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহম্মেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুরো বাড়ি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে যে কোনো সময় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।’
জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাটি ভারতীয় প্রকৃতির কি না তা যাচাই করতে ইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, ওই ব্যক্তি চার বছর ধরে ভারতের চেন্নাইয়ে কাজ করেন। সেখানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অবনতি হলে ভয়ে তিনি গত ৮ মে বিমানে আখাউড়া সীমান্তে আসেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, দেশে আসার পর সীমান্তেই তার ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকার কথা। কিন্তু তিনি সেখান থেকে গোপনে অটোরিকশা দিয়ে ভেঙে ভেঙে রূপগঞ্জের বরপা তারাবো এলাকায় বাড়িতে চলে আসেন। গত ৯ মে থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
পরদিন স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানালে তারা বাড়িটিকে নজরদারিতে আনেন এবং ওই বাড়ির সকলকে কোয়ারেন্টিন রাখেন।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। ওই বাড়ির লোকজনকে টেলিমেডিসিন সেবাসহ খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরণ নিয়ে উদ্বেগের কারণে গত ২৬ এপ্রিল সীমান্ত ১৪ দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে আরও ১৪ দিনের জন্য বাড়ানো হয় নিষেধাজ্ঞা।
এই সময়ে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে দেশে ফেরার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তবে শর্ত দেয়া হয়েছে, দেশে ফিরে স্থলবন্দরে করোনা পরীক্ষা করিয়ে সেখানে ১৪ দিন নিজ খরচে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
কিন্তু বহুজন এই শর্ত ভঙ্গ করে গোপনে সীমান্ত থেকে নিজ এলাকায় চলে আসছেন বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি ভোলাতেও এই ধরনের একটি খবর পেয়ে এক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
এরই মধ্যে দেশে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্তের কথা জানিয়েছে সরকার।