বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এখন ক্রেতা নেই, দোকানে পচছে তরমুজ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১২ মে, ২০২১ ২২:৩৪

‘এইবার তরমুজ বেইচ্চা ধরা খাইছি। হারাদিন বয়্যা থাকলেও তরমুজ খাইবার লোক খুব কম। আমার ৮-৯ টা পচা তরমুজ হগল দিনই ফাইয়্যা দেই।’

রমজানের শুরুতে চাহিদা তুঙ্গে থাকায় অতিরিক্ত মুনাফা করা তরমুজ ব্যবসায়ীরা এখন পড়েছেন বিপাকে। রোজার শেষে এসে বৃষ্টিতে ক্রেতারা কিনতে চাইছেন না ফলটি। ফলত দোকানে নষ্ট হওয়ার পথে।

রমজান মাসের পুরোটা সময় জুড়েই তরমুজের বেশি দাম নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পিস হিসেবে কিনে কেজি হিসেবে বাড়তি দামে বিক্রির পর তরমুজ না কিনতে ফেসবুকে নানা আহ্বান জানানো হতে থাকে।

ময়মনসিংহের তরমুজ বিক্রেতারা জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর এখন তারা পিস হিসেবেই বিক্রি করছেন। তবে আগের মতো কিনতে চাইছে না মানুষ।

শহরের চরপাড়া এলাকার তরমুজ বিক্রেতা মো. মাসুম জানান, কয়েক সপ্তাহ আগে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন৷ এতে লাভ হতো তিন হাজার টাকা। এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘রাস্তার ধারো কয়েকশো তরমুজ নিয়া বয়া আছি। তিন-চাইর দিন গেলেগাই পইচ্যা যায়। ডেইলি ১৪-১৫টা পইচ্যা নষ্ট অয়। এইডি বেচলেও ৪-৫ হাজার টেহা ফাইতাম।’

এই মোড়েই শান্ত নামে এক যুবক ৫-৬ বছর ধরে প্রতি বছর তরমুজ বিক্রি করেন। তিনি ছোটগুলোর দাম চাইছেন ২৫০ টাকা, বড়গুলোর পিস ৪৫০ টাকা। তবে বেচতে পারছেন না। তিনি জানান, দিনে ২০ থেকে ২৫টি তরমুজ নষ্ট হয় তার।

নগরীর ব্যস্ততম পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ের বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, ‘এইবার তরমুজ বেইচ্চা ধরা খাইছি। হারাদিন বয়্যা থাকলেও তরমুজ খাইবার লোক খুব কম। আমার ৮-৯ টা পচা তরমুজ হগল দিনই ফাইয়্যা দেই। অনেক লোক তরমুজ বাড়িত লইয়্যা যাওয়ার পরে পচা পায়। এর লাইগ্যা পচাডাই ফেরত দিবার আহে। লোকজন হমানে কিন্না খাইলে পচন ধরত না। এরম কইরা তরমুজ কম বেচা অইলে আমগর সংসার চলব কেমনে?’

তিনি বলেন, ‘কাবুল, নাবিন, রফিক, ফজরসহ অনেকে তরমুজ বেইচ্চা লস খাইছে। হের লাইগ্যা তরমুজ বেচা ছাইড়া দিয়া বাড়িত বেকার অবস্থায় বয়্যা রইছে।’

তবে ক্রেতারা বলছেন, এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ বিক্রেতাদের অতি মুনাফার প্রবণতা। তারা এখন পিস হিসেবে বেচতে রাজি হচ্ছেন বটে, তবে দাম হাঁকছেন ঠিকই বেশি।

হান্নান মুন্সি নামে একজন বলেন, ‘পিস হিসেবে বিক্রি করলেও দাম কমানো হয়নি। ৩০০ টাকার নিচে তরমুজ কিনলে অনেক ছোট সাইজের হয়। আমরা সবাই সাতদিন তরমুজ না কিনলেই সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) ময়মনসিংহের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আজিজুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গরম আর রমজানে তরমুজের চাহিদা বেড়ে যাবে সেটা ব্যবসায়ীরা জানেন। এ জন্য দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে তরমুজ যদি কয়েকদিন একস্থানে পড়ে থাকে তাহলে ছত্রাক আক্রমণ করে এবং ফলটি পচে যায়। বেশি দামে বিক্রি করার আশায় না পচিয়ে কম লাভে বেশি পরিমাণ বিক্রি করলে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই উপকৃত হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর