শরীয়তপুরের সরকারি কাজে বাধা ও এক পুলিশ কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার মামলায় সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইয়াসিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার গ্রাম চিকন্দী এলাকার আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট রাতে প্রতিবেশী আব্দুল কাদের হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে তাদের বিরক্ত করেন।
এ সময় ওই বাড়ির কয়েকজন সদস্য রাজ্জাককে মারপিট করেন। পরদিন রাজ্জাকের মা করিমন নেছা ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির ওই সময়ের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) ফারুক আহম্মেদ।
ফারুক ২৪ আগস্ট বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। এ সময় শৌলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই মোজাম্মেল হাওলাদার এসে পুলিশের উপস্থিতিতে বাদী করিমন নেছাকে মারপিট করেন। পরে পুলিশ মোজাম্মেল হাওলাদারকে আটক করে।
খবর পেয়ে শৌলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াসিন এসে পুলিশ কর্মকর্তা ফারুককে চড়-থাপ্পড় মেরে মোজাম্মেলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত করার পর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন বলেন, পুলিশ লাঞ্চিত করার মামলার ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
বিষয়টি জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিনের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. তুহিন মিয়া বলেন, ‘চেয়ারম্যান বরখাস্ত হওয়ার কোনো আদেশ ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছেনি। চেয়ারম্যানসহ আমরা কেউ বিষয়টি জানি না।’
জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বরখাস্ত হওয়ার ঘটনাটি সত্য। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বরাবর এসেছে। গণ কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আদালত আমলে নিলে তাকে সামরিক বরখাস্ত করা হয়।
‘বিচারে যদি সে নির্দোষ হয় তাহলে পুনরায় কার্যক্রম চালাতে পারেন। বুধবার সকালে আদেশটি ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হবে। এ সময় তিনি সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।’