একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি, লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলের ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বীরাঙ্গনা চারুবালাকে ৫০ হাজার টাকা সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।
রোববার বিকেলে ফরিদপুরের চর ভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কনফারেন্স রুমে বীরাঙ্গনা ও শহিদজায়াদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানে তাকে এ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। সংগঠনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ফরিদপুরের বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা নারীরা তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শাহরিয়ার কবির তা শোনেন। পরে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বীরাঙ্গনাদের স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। বীরাঙ্গনারা তাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা যাতে নির্ভয়ে বলতে পারেন, এজন্য নির্মূল কমিটি ৩০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আপনাদের স্বীকৃতি এবং সহযোগিতার জন্য নির্মূল কমিটি সাধ্যমতো চেষ্টা করবে।’
এ সময় তিনি চর ভদ্রাসনের বীরাঙ্গনা ভূমিহীন চারুবালা এবং ফরিদপুর সদরের ভাড়া করা একটি রুমে বসবাসরত বীরাঙ্গনা মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন। অন্য বীরাঙ্গনা ও শহিদজায়ারা তাদের অতীত স্মরণ করে দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সাংবাদিক দিব্যেন্দু দ্বীপের মাধ্যমে শাহরিয়ার কবিরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এরপর দিব্যেন্দু দ্বীপ সংগঠনের পক্ষ থেকে চারুবালার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ সময় সামাজিকভাবে স্বীকৃত এবং আত্মস্বীকৃত আরও ৮ জন বীরাঙ্গনাকে শাড়ি উপহার দেয়া হয়। তাদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন নির্মূল কমিটির মুখপত্র জাগরণে প্রকাশ করা হবে।
শহিদজায়া, শহিদমাতা ও বীরাঙ্গনা চারুবালা বাস করতেন পদ্মার চরের একটি ঝুপড়িতে। দিব্যেন্দু দ্বীপ চর ভদ্রাসনে গণহত্যা নিয়ে গবেষণা করতে গেলে তার খোঁজ পান। চারুবালা তখন ভিক্ষা করে দিনযাপন করতেন। পরে চারুবালাকে নিয়ে একটি মর্মস্পর্শী লেখা তৈরি করেন দিব্যেন্দু। সেটি জাগরণে প্রকাশিত হয়। লেখাটি শাহরিয়ার কবির এবং বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে নির্মূল কমিটির উপজেলার আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদ। সঞ্চালনা করেন শহিদ স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির ফরিদপুরের সদস্যসচিব উৎপল সরকার সাগর।