বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের খুশিতে লাপাত্তা করোনা!

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১০ মে, ২০২১ ২০:৩৯

বিক্রেতা আসাদ মুখে মাস্ক না থাকা সম্পর্কে বলেন, বেশিক্ষণ মুহে মাস্ক লাগাইলে কষ্ট অয়। এর লাইগ্যা খুইল্যা রাহি৷ পুলিশ আইলে লাগাই। মুহে মাস্ক লইয়্যা ক্রেতাদের লগে কথা কইলে কথা বুঝা যায় না। আর তাই মাস্ক লাগাই আর খুলি। করোনারে পাত্তা দেই না দেইখ্যাই করোনা ধরে না। ভয় পাইলেই ধরবো!

ঈদ সামনে রেখে ময়মনসিংহের বিপণিবিতান আর ফুটপাতে তুমুল বেচাকেনা চলছে। দিন যত এগোচ্ছে, ক্রেতার ভিড় ততই বাড়ছে। সামাজিক দূরত্ব না রেখে গাদাগাদি করে পছন্দের জিনিস কিনছেন সবাই।

ময়মনসিংহের সবচেয়ে বেশি বিপণিবিতান মূল শহরের গাঙ্গিনারপাড়ে। স্টেশন রোড থেকে গাঙ্গিনারপাড়ের পুরো এলাকায় বিপণিবিতান। তবে গত কয়েক বছর ধরে শহরের নতুন বাজার, সি কে ঘোষ রোড, মিন্টু কলেজ সংলগ্ন এলাকা, চারপাড়া এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় শপিং মল। ঈদের আগ মুহূর্তে এই শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও ঈদের আমেজে কেনাকাটা করতে আসা মানুষ তা আমলেই নিচ্ছেন না। এতে করে করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন শপিং মল ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় শপিং মলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। স্টেশন রোড থেকে গাঙ্গিনারপাড় এলাকা পর্যন্ত দুপাশের সড়ক দিয়ে গাদাগাদি করে ক্রেতারা হেঁটে বিভিন্ন শপিং মলে কেনাকাটা করছেন। তবে শপিং মলের চেয়েও বেশি ভিড় এই সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে।

দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা-বিক্রেতার মুখেই মাস্ক নেই। যে যার মতো থুতনিতে মাস্ক রেখে দামাদামি করে পছন্দের জিনিস কিনছেন। কোনো বিপণিবিতানের সামনে নেই হাত ধোয়ার পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। সবাই যেন করোনাকে ভুলে গিয়ে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে।

পালিকা মার্কেটের পুরোনো ব্যবসায়ী আলম বলেন, লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় ভালো একটা ধাক্কা খেয়েছি। দোকান বন্ধ রেখে মালিককে ভাড়া দিয়েছি। তবে আশা করছি ঈদের আগেই সব ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।

গাঙ্গিনারপাড় ফুটপাতে ছোটদের জামাকাপড় বিক্রি করেন আসাদ নামে এক যুবক। মুখের মাস্ক কোথায় জিগ্যেস করতেই বলেন, বেশিক্ষণ মুহে মাস্ক লাগাইলে কষ্ট অয়। এর লাইগ্যা খুইল্যা রাহি৷ পুলিশ আইলে লাগাই। মুহে মাস্ক লইয়্যা ক্রেতাদের লগে কথা কইলে কথা বেশি বুঝা যায় না। তাই মাস্ক লাগাই আর খুলি। করোনারে পাত্তা দেই না দেইখ্যাই করোনা ধরে না। ভয় পাইলেই ধরবো!

দি ডার্লিং পয়েন্টে শপিং করতে আসা রবীন্দ্রনাথ আচার্য নামে এক ক্রেতা বলেন, অল্প কিছু কেনার ইচ্ছা নিয়ে মার্কেটে এসেছি। আমরা সচেতন থাকলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। এভাবেই আমার মতো এক এক করে শপিং মল আর ফুটপাতে মানুষের ঢল নেমেছে। আমাদেরই ভুল। আমরা এই একটা ঈদে শপিং না করলে কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারলে করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকিটা কমে যেত৷ তবে ছেলেমেয়েদের মন রাখতে ঠিকই আসতে হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মানুষ যেভাবে শপিং মলে যাচ্ছেন, এতে করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এই ঈদে নিজ থেকে সচেতন হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজার রেখে কেনাকাটা করার দরকার ছিল। এভাবে অসচেতনতার জন্য সামনে কঠিন সময় আসতে পারে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, বিক্রেতাদের বারবার বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রি করার জন্য। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য মাঠে পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া যাদের মুখে মাস্ক নেই, তাদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক দেয়া হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর