দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যে ঈদে ঘরমুখি মানুষের ভিড় ঠেকাতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ শনিবার সকাল থেকে ফেরি বন্ধ রাখলেও ভোর থেকেই ঘাট এলাকায় ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যানবাহনেরও ছিল র্দীঘ সারি।
ফেরির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষার মধ্যে ঘাট এলাকায় পাবলিক টয়লেট না থাকায় এ সময় ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো মানুষ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহায় নারী, শিশু ও বয়স্করা। শৌচাগার না থাকায় অনেকের দুর্ভোগ ছিল সীমাহীন।
পদ্মা পার হতে আসা ঘরমুখো যাত্রীরা জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষদের যাতায়াতের অন্যতম রুট পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া। এই নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত। তবে ঘাট এলাকায় নেই স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিত টয়লেট। নেই বিশ্রামাগার ও ভালো মানের হোটেল। এতে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হয় ঘাটে আসা নারী, শিশু ও বয়স্কদের।
ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকা বরিশাল সদরের আসমা বেগম জানান, ফেরি বন্ধের বিষয়টি জানতেন না। সকালে ঘাটে গিয়ে জানতে পারেন ফেরি বন্ধ। পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে ফেরির অপেক্ষায় থাকার সময় শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। তবে ফেরি ঘাটে পাবলিক টয়লেট না থাকায় পাশের একটি বাড়িতে যেতে বাধ্য হন।
গোপালগঞ্জের রুনা আক্তার বলেন, ‘রাতে এসে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করছি ফেরির জন্য। এখনও ফেরির দেখা পাইলাম না। ছোট ছেলে-মেয়েদের টয়লেট করার জন্য মানুষের বাড়িতে যেতে হয়।
‘ঘাটে যদি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট থাকত, তাহলে অন্য মানুষের বাড়িতে যেতে হতো না। মানুষ খারাপ ব্যবহার করে।’
রাজবাড়ী সদরের সেফালী বেগম বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাভার থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসছি। ঘাট পার হলেই বাড়িতে যেতে পারি। কিন্তু এই রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ফেরির জন্য।
‘ঘাটের পাশে যদি বিশ্রামাগার করা হয়, তাহলে যাত্রীদের এই রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না।’
মাগুরার শিরিন আক্তার জানান, বাচ্চাদের টয়লেট পেলে ঘাটের পাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে না পেয়ে বাধ্য হয়ে ফেরি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের উচিত প্রত্যেক ঘাটে একটি করে টয়লেট নির্মাণ করা।’
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, পাবলিক টয়লেট না থাকায় যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। ঘাটে আসা যাত্রীরা ফেরিতে, হোটেলে ও স্থানীয় লোকজনের বাড়িতে প্রাকৃতিক কাজ সারে।
যাত্রীদের জন্য ঘাটে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও বিশ্রামাগার থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রুহুল আমিন জানান, যাত্রীদের জন্য ঘাট এলাকায় ২০টি শৌচাগার নির্মাণ করা হবে। নির্মাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।