বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্ধ না জেনে ফেরিঘাটে, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

  •    
  • ৮ মে, ২০২১ ০৯:৪৭

খুলনার যাত্রী সাত্তার মিয়া বলেন, ‘ফেরি বন্ধ থাকায় খুব বিপদে পড়েছি। না পারছি ফিরে যেতে, না পারছি ফেরি পার হতে। সরকারের উচিত ছিল আগে বন্ধের বিষয়টি ঘোষণা দেয়া। তাহলে আমাদের এই ভোগান্তি হতো না।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শনিবার সকাল থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।

হঠাৎ নেয়া এমন সিদ্ধান্ত না জেনে হাজার হাজার মানুষ ঘাটে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম নৌরুট পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় শনিবার সকাল ৬টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

পাটুরিয়া ঘাটে আসা যশোরগামী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘রাতে ঘাটে এসেছি। আসার পর শুনতে পারলাম ফেরি বন্ধ। এখন তো ফেরি চলতেছে না। অপেক্ষায় আছি কখন ফেরি চলবে। খুব ভোগান্তিতে আছি।’

খুলনার যাত্রী সাত্তার মিয়া বলেন, ‘ফেরি বন্ধ থাকায় খুব বিপদে পড়েছি। না পারছি ফিরে যেতে, না পারছি ফেরি পার হতে। সরকারের উচিত ছিল আগে বন্ধের বিষয়টি ঘোষণা দেয়া। তাহলে আমাদের এই ভোগান্তি হতো না।’

বিআইডব্লিটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে সাধারণ যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়ে উপচে পড়া ভিড় দেখা দেয়। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বেড়ে গেছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও।

সেই সঙ্গে ফেরিতে গাদাগাদি করে যাত্রী পার হচ্ছিল। এসব কারণে শনিবার সকাল ৬টা থেকে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জিল্লুর রহমান আরও জানান, সাধারণ যাত্রীদের জন্য বন্ধ থাকলেও এই সময় অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি ও জরুরি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন পার হতে পারবে। আর সন্ধ্যার পর থেকে জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হবে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির জানান, ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরিতে কোনোভাবেই যেন যাত্রী পার না হতে পারে, সে ব্যাপার পুলিশ কাজ করছে।

অন্যদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণার পরও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসতে দেখা গেছে যাত্রীদের। তবে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখ থেকে তাদের ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

যাত্রীরা জানান, মাঝরাতের এ ঘোষণা তাদের অনেকেই জানেন না। হঠাৎ করে ঘাটে এসে দেখেন ফেরি বন্ধ, আর পুলিশ তাদের ঘাট এলাকা থেকে বের করে দিচ্ছে।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, মাওয়া চৌরাস্তা ও শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখে পুলিশের টহল চৌকি দেখা গেছে। এসব টহল চৌকি থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী যাত্রীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

শিমুলিয়া ফেরি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) হিলাল উদ্দিন বলেন, ‘শিমুলিয়া ঘাটের এক কিলোমিটার দূর থেকে যাত্রীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোনো যাত্রীকে ঘাট এলাকায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

‘এত দিন লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল, আর আজ থেকে দিনের বেলা ফেরি চলাচল বন্ধ। ফলে কোনোভাবেই নদী পার হতে পারবেন না কেউ। যাত্রীদের ঘাট এলাকায় ভিড় না করতে অনুরোধ করছি।’

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাফায়াত আহমেদ জানান, শেষ রাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।

তবে সন্ধ্যার পর কয়েকটি ফেরি দিয়ে সার্ভিস চালু রাখা হবে কি না এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে ভিড় করছেন। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফেরি না ছাড়ায় যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেলেও অনেকেই অপেক্ষা করছেন বিকল্প পথ খোঁজার।

বিআইডব্লিউটিসি জানায়, ঈদে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ গাদাগাদি করে ফেরিতে করে পার হয়ে বাড়ি ফিরছেন। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় এ প্রবণতা কয়েক গুণ বেশি দেখা যায়। ফেরিতে মানুষ পারের ছবি রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা দিনজুড়ে।

বাংলাবাজার ৩ নম্বর ঘাট-এর সহকারী ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, 'বিআইডব্লিউটিসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাবাজার ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। ফেরি না ছাড়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে কেউ কেউ এখনও ঘাটে অপেক্ষা করছেন।'

এ বিভাগের আরো খবর