বরগুনায় ঘুষ নেয়ার অভিযোগে এলজিইডির প্রকৌশলীকে মারধর করেছেন এক ঠিকাদার। তবে প্রকৌশলী বলেছেন, ঘুষ নয় ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হয়েছে। ওই ঠিকাদার পরে তার কাছে ক্ষমা চাইলেও ঘুষের অভিযোগে অনড় রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার, বরগুনা সদরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয়ের সামনে।
সেখানে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে মারধর করেছেন ঠিকাদার ফরহাদ জমাদ্দার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে কার্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেলে বসে ছিলেন মিজানুর। সে সময় ঠিকাদার ফরহাদ হঠাৎই সেখানে গিয়ে তাকে ‘ঘুষখোর’ বলে গালমন্দ করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করলে মিজানকে মারধর করতে থাকেন তিনি। পরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও এলজিইডির কর্মচারীরা গিয়ে ফরহাদকে থামায়।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আহমদ সোহাগ বলেন, ‘উপজেলা পরিষদে আমাদের একটি মিটিং ছিল। তা শেষ করে বের হয়ে দেখি তারা মারামারি করছে। আমরা গিয়ে তাদের শান্ত করি। কেন তারা মারামারি করছিলেন তা আমি নিশ্চিত নই।’
ঘটনার সত্যতা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার দুজনই স্বীকার করেছেন।
ঠিকাদার ফরহাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মিজানুর রহমান একজন অসৎ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তার কলম চলে না। ঘুষের জন্য তিনি আমার জামানতের টাকা আটকে রেখেছেন। বরগুনার অনেক ঠিকাদারের টাকা তিনি আটকে রেখেছেন। আবার অনেকে ঘুষ দিয়ে জামানতের টাকা পেয়েছেন। আমি ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমার কাজ করবেন না। এ জন্য আমি তাকে মেরেছি। পরে আবার তার পা ধরে মাফ চেয়েছি।’কখন ও কী কাজে মিজানুর ঘুষ নিয়েছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে চাননি ফরহাদ। তিনি অভিযোগ করেছেন, ঘুষের টাকায় বরগুনার আমতলার পাড় এলাকায় বহুতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন মিজানুর, গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি। মারধরের শিকার প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ফরহাদের এসব অভিযোগ সত্য নয়।
তাহলে কেন মারধর করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফরহাদ আমার এলাকার বড় ভাই। কেন হঠাৎ তিনি আমাকে মারধর করলেন তা বুঝতে পারছি না। হয়তো ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।’
এ বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগও করবেন না বলে জানিয়েছেন মিজানুর।
ঘটনাটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস কে আরিফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নিবেন। একই কথা বলেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তরিকুল ইসলামও।