বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাস চলাচলে খুশি শ্রমিকরা, অস্বস্তিতে যাত্রীরা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৭ মে, ২০২১ ০২:৪৩

সীমিত পরিসরে বাস চলাচল শুরু হলে শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে যাত্রী ও শ্রমিক কোনপক্ষের গরজ নেই। যাত্রীরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে বাসগুলো তাদের নামিয়ে দিচ্ছে জেলা সীমানায়। সেখান থেকে অন্য বাস ধরছেন তারা।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ২২ দিন বন্ধ ছিল গণপরিবহন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও শর্তসাপেক্ষে শুরু হয়েছে পরিবহন চলাচল।

বৃহস্পতিবার প্রথমদিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় সীমিত পরিসরে বাস চলাচল শুরু হলে শ্রমিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে যাত্রী ও শ্রমিক কোনপক্ষের গরজ নেই। যাত্রীরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে বাসগুলো তাদের নামিয়ে দিচ্ছে জেলা সীমানায়। সেখান থেকে অন্য বাস ধরছেন তারা।

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্বল্প পরিসরে আন্তঃজেলায় গণপরিবহন চলাচলে স্বস্তি ফিরেছে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে। তবে বাসগুলোতে প্রথমদিনে ছিল কম যাত্রী।

বৃহস্পতিবার ফরিদপুর পৌর বাসস্ট্যান্ড গিয়ে দেখা যায়, সরব বাসস্ট্যান্ড, শ্রমিকদের অনেকে গাড়ি ধুয়ে মুছে রেডি করছেন। কেউ কেউ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।

পরিবহন শ্রমিক আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আমরা খুশি, রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামতে পেরেছি। তবে অন্য জেলায় যেতে দিলে আরও বেশি ভাল হত।’

আরেক শ্রমিক সালাম মন্ডল বলেন, ‘কয়েকদিন পর ঈদ। আয় রোজগার যাই হোক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের সময়টা ভালো কাটাতে পারব।’

ফরিদপুর থেকে মাগুরা যাবেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরাসরি গাড়ি মাগুরা যাচ্ছে না। মধুখালীর কামারখালী পর্যন্ত যাবে, কিন্তু তার পরে কীভাবে যাবো। যাতায়াতে ভোগান্তি রয়েই গেল।’

ফরিদপুরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. তুহিন লস্কর বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। আমরা দেখছি কোনো বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তুলছে কি না। তাছাড়া জেলার বাইরে কোনোভাবেই যাওয়া যাবে না, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা হচ্ছে।’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, প্রথম দিনে ময়মনসিংহে চরম যাত্রীসংকটে পড়েন বাস চালকরা। প্রাইভেটকারে বাসের চাইতে সামান্য ভাড়া বেশি নিলেও যাত্রীরা অনেকে প্রাইভেটকারে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহের পাটগুদাম বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, লাইন ধরে বাস চালকরা যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছেন। চলাচল করা অধিকাংশ গাড়িতে দেখা যায় ১০-১২ জন করে যাত্রী। তাদের অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক।

নগরীর মাসকান্দা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় এনা পরিবহনসহ দূরপাল্লার সকল বাস বন্ধ। পাটগুদাম বাস টার্মিনালে নাবিন এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে বসে থাকা যাত্রী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে সিএনজি করে এসেছি। মাওনা পর্যন্ত যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে আধাঘণ্টা বসে আছি। বেশি যাত্রী না থাকায় বাস ছাড়ছেনা।’

বাসের স্টাফ হাবিব বলেন, ‘ভাবছিলাম এতদিন পর গাড়ি চলায় উপচে পড়া ভিড় থাকবে। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। এভাবে ১০/১২ জন যাত্রী নিয়ে গাড়ি চললে তেল খরচও উঠবেনা।’

ময়মনসিংহ জেলার লোকাল বাসের সম্পাদক সামছুল আলম বলেন, ‘আমরা বাসের চালক, হেলপারসহ সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চালাতে বলেছি। কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

ময়মনসিংহ জেলা মটরমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায়রা প্রণোদনার টাকা পেলেও ময়মনসিংহে গণপরিবহনের কোনো শ্রমিক প্রণোদনা পায়নি। আমরা চাই সকল পরিবহন শ্রমিকসহ মালিকদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা।’

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, গণপরিবহন চালুর প্রথমদিনে শ্রমিকদের তুলনায় যাত্রীদের বেশি দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করতে। মেহেরপুর থেকে পাশের জেলার খলিশাকুন্ডি, চুয়াডাঙ্গার দরবেশপুর ও মুজিবনগর পর্যন্ত বাস চলাচল করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে যাত্রী কম থাকলে বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা ও বাড়তে থাকে। তবে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার সময় অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও একটু পরই মাস্ক খুলে ফেলছেন।

বাস কর্মচারী জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রায় একমাস বাস বন্ধ থাকায় জমানো টাকা শেষ। কয়েকদিনে যা উপার্জন হবে, তাতেই হবে ঈদের বাজার।’

মাগুরা প্রতিনিধি জানান, টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার চালু হওয়া গণপরিবহনে অনেক শর্ত অমান্য করা হচ্ছে। সকাল থেকেই বাসগুলোতে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। বাসের শতকরা ৫০ ভাগ সিট খালি রাখার নিয়ম মানা হচ্ছে না।

যাত্রীদের অনেকেকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এমনকি কোন বাস কাউন্টারেই হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। মাগুরা ভায়না এলাকা থেকে ঢাকা রোড, নতুন বাজার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড, যশোর বাসস্ট্যান্ডসহ সীমাখালীতেও একই চিত্র পাওয়া গেছে।

বাসযাত্রী রাহেলা বেগম বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে বোনের বাড়ি ঝিনাইদহ যাচ্ছি। শুনছি মাগুরার শেষ সীমান্তে নামিয়ে দেবে। এরপর ঝিনাইদেহর বাসে হেটে গিয়ে উঠতে হবে।’

বাস কাউন্টার প্রতিনিধি আবুল কাসেম বলেন, ‘বাস সংকট আছে। আমরা সিট ফাঁকা রাখতে পারছি না। যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়ছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর