চট্টগ্রামে পাওনা টাকা চাওয়ায় রুবেল নামের এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে সোহরাব হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
বুধবার গভীর রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টা গণমাধ্যমকে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার সোহরাব হোসেনের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা থানায়।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাতে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, ‘২০২০ সালের ২ মার্চ নগরীর হালিশহর চৌচালা এলাকার একটি গর্ত থেকে এক ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। সামছুল নামের এক ব্যক্তি দাবি করেন, কঙ্কালটি তার ভাই রুবেলের। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ মরদেহটি রুবেলের বলে নিশ্চিত হয়৷ এর আগে ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর সামছুল হালিশহর থানায় তার ভাই রুবেল নিখোঁজ হয়েছেন বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।’
সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, ‘মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই রুবেল হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুধবার গভীর রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে সোহরাব নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ছয় বছর ধরে চট্টগ্রামের হালিশহর থানার চৌচালা এলাকায় বর্গা চাষী হিসেবে জমি চাষ করতেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে পরিচয় হয় ওই এলাকার আরেক বর্গাচাষি রুবেলের। রুবেল বর্গা দেয়ার পাশাপাশি মানুষকে সুদে টাকা ধার দিতেন।’
সন্তোষ কুমার আরও বলেন, ‘একসময় সোহরাবও রুবেলের কাছ থেকে হাজারে ১০০ টাকা সুদে দুই হাজার টাকা ধার নেন। এর কিছুদিন পর আরও ২৬ হাজার টাকা নিয়ে তার পরিচিত কয়েকজনকে দেন সোহরাব।’
‘৬ মাস পর ২৮ হাজার টাকা একসঙ্গে ফেরত চান রুবেল। এ নিয়ে একদিন চৌচালা রোডের উত্তর পাশে ওয়াসার সীমানা জমিতে রুবেলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সোহরাবের।
এক পর্যায়ে রুবেল সোহরাবকে কোদাল দিয়ে কোপ দেন। সোহরাবও তার হাতে থাকা দা দিয়ে রুবেলের মাথায় আঘাত করেলে মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারান তিনি। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে ঘটনাস্থলেই একটি গর্ত করে মরদেহটি মাটিচাপা দেন সোহরাব।’
‘রুবেলের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটি নিয়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন সোহরাব। ঘটনার তিনদিন পর চট্টগ্রাম থেকে বগুড়ায় চলে যান তিনি। পরে বগুড়া থেকে পালিয়ে গাজিপুরের কালিয়াকৈর যান।’
দুইজনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং ঘটনার পর সোহরাব নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তদন্তের এক পর্যায়ে সোহরাবকে গাজীপুর থেকে আটক করে তারা।
সোহরাব বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।