সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানী এলাকায় জ্বলতে থাকা আগুন চার দিন পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে ফের আগুন জ্বলে উঠলে তা দ্রুত নেভাতে বনের ভেতরেই তৈরি করা হয়েছে বিশেষ রিজার্ভার।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মাটি খুঁড়ে রিজার্ভার তৈরি করে পানি ভরে রাখা হয়েছে। কোথাও আগুন জ্বলে উঠলেই যাতে দ্রুত নেভানো সম্ভব হয়। আলোর স্বল্পতা থাকায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আগুন নির্বাপণ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। প্রয়োজন হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা শুক্রবার কাজ করবেন।
বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনের পুড়ে যাওয়া অংশে বন বিভাগের কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী অবস্থান করবেন। তারা সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করবেন।
চার দিনের আগুনে সুন্দরবনের প্রায় ১০ একর জমির ছোট ছোট গাছসহ লতাগুল্ম পুড়ে গেছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। তবে বন বিভাগ ক্ষতির পরিমাণ বেশি নয় বলে বলছে। তারা দাবি করেছে আগুনে পুড়েছে মাত্র দুই একর বনভূমি।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘সুন্দরবনের দাসের ভারানী এলাকায় জ্বলতে থাকা আগুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের পাশাপাশি বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিম কাজ করেছে। তারপরও যদি আগুন কোনোভাবে জ্বলে ওঠে, তা দ্রুত নেভাতে মাটি খুঁড়ে রিজার্ভার তৈরি করে পানি ভর্তি করে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের পর্যবেক্ষণে আগুনে বনের ১০ একর জমির ছোট ছোট গাছসহ লতাগুল্ম পুড়ে গেছে। তবে কোনো বন্য প্রাণীর পুড়ে মারা যাওয়ার তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
সুন্দরবন শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সোমবার দুপুর থেকে জ্বলতে থাকা আগুন বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে বনের বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়া উড়ছে। বনের মাত্র দুই একর জায়গা পুড়ে গেছে বলে আমরা প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। বনের ছোট গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে গেছে। সুন্দরবনে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানী এলাকায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের সহায়তায় মঙ্গলবার বিকেলে আগুন নেভানো হয়। কিন্তু বুধবার সকালেই ফের আগুন লাগে আগুন লাগা স্থানের এক কিলোমিটার দক্ষিণে, যা বৃহস্পতিবার বিকেলে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আবার আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নাকচ করতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। সেজন্য চলছে পর্যবেক্ষণ।