সারা দেশে চলমান লকডাউন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে ১৬ মে পর্যন্ত। কিন্তু লকডাউনের দেখা মিলছে না ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলা শহরের রাস্তায় বেড়েছে লোকজনের চলাচল।
স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা উপেক্ষা করে শহরের প্রত্যেকটি হাটবাজার ও শপিংমলে ভিড় করছেন ক্রেতারা। জেলার আশপাশের গ্রাম থেকেও ঈদের জন্য পছন্দের পোশাকের খোঁজে লোকজন ছুটছেন শহরের অভিজাত মার্কেট থেকে ফুটপাতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাপড়ের দোকানগুলো বেচাকেনা শুরু করে সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। কিন্তু শপিংমলগুলো সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত ছিল।
শুধু শপিংমল ও কাপড়ের দোকানই নয়, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কাঁচাবাজারগুলোতে। নেই কোনো সামাজিক দূরত্ব, স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশের ব্যবস্থা।
তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। মাইকিং করে কাঁচাবাজার ও মার্কেটে সতর্কতা অবলম্বন করার কথা জানালেও তাতে তেমন সাড়া দিচ্ছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
পৌর শহরের সড়ক বাজারের মার্কেট, হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট, পৌর মার্কেট, বি-বাড়িয়া মার্কেট, এফএ টাওয়ার মার্কেটসহ বিভিন্ন ছোট-বড় মার্কেটে নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে শহরের ফারুকী বাজার, জগৎ বাজার, বৌ বাজার, আনন্দ বাজার, মেড্ডা বাজারগুলোয় গা-ঘেঁষা জনসমাগম রয়েছে ক্রেতাদের।
ফুটপাতের ব্যবসাগুলোও পিছিয়ে নেই। শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাতে ভ্যান নিয়ে বিক্রি করছে বাহারি জামাকাপড়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আনন্দ বাজারের ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন, ‘কিয়ের করোনা। আগে তো খাইয়া বাঁচতে হইব। মানুষের কিননা খাইতে হইব। আর আমাগো বেইচ্চা। কোনো করোনা নাই।’
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আবু ছায়েদ মিয়া বলেন, ‘করোনার কারণে আমাদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে ঈদ সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেয়ায় বেচাকেনা মোটামুটি ভালোই হচ্ছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করি।’
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান নিউজবাংলাকে বলেন, প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি ও লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করার অভিযোগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হচ্ছে। তা ছাড়া রাস্তায় যারা মাস্ক ছাড়া বের হচ্ছে, তাদের কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জানান, গত ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ৪ মে পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬০৮ জনের। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ জন।