বিভিন্ন অপরাধ বিবেচনায় ইটভাটা মালিক ইকবাল মাহমুদ টিটোকে তলব করেছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট। টিটো সেখানে হাজির হন অস্ত্র নিয়ে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার পেলে শুরু হয় সমালোচনা। যদিও ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা মেনে নিয়েছেন ইটভাটার মালিক।
ঘটনাটি চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদায়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত থেকে জানানো হয়, চুয়াডাঙ্গা-দামুড়হুদা আঞ্চলিক সড়কের ওপর ইটভাটার মাটি পড়ে থাকায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল। বৃষ্টির পানিতে কাদা হলে পিচ্ছিল সড়কে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এর মাঝে একজন ডিম ব্যবসায়ী শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনে ডিম নিয়ে যাওয়ার সময় তা দুর্ঘটনায় পড়ে। যানটি উল্টে সব ডিম নষ্ট হয়ে যায়। পথচারীরা এই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেন।
ডিম ব্যবসায়ীর দুরবস্থার ঘটনা জেনে সেখানে যান দামুড়হুদার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত কুমার সিং। তিনি সড়কের ওপর মাটি ফেলে রাখায় রাজা ব্রিকসের মালিক ইকবাল মাহমুদ টিটোকে তলব করেন। তখন ব্যক্তিগত লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হন টিটো।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ডিম ব্যবসায়ী কাঁঠালতলা গ্রামের এনামুল হককে ৩৫ হাজার টাকা দিতে ইটভাটা মালিককে নির্দেশ দেয়। গাড়িচালক ও সহযোগীকেও ৫০০ টাকা করে দিতে বলা হয়।
সেই সঙ্গে রাজা ব্রিকসের মালিকের কাছ থেকে চারটি শর্তজুড়ে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। রাস্তা পরিষ্কার রাখা, রাস্তার পাশের ইট সাত দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলা ও ইটভাটার মাটি পরিবহনের সময় পলিথিন বা চটের বস্তা ব্যবহারের শর্ত মেনে নেন মালিক।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, ‘অস্ত্রটি লাইসেন্স করা হলেও তা নিয়ে মোবাইল কোর্টে হাজির হওয়া ঠিক হয়নি। এভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করে তিনি লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেছেন।’
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। লাইসেন্স করা অস্ত্র জনসমক্ষে প্রদর্শন করতে পারবেন না। নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে কিংবা গাড়িতে রাখা যাবে। এ ঘটনায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রধারীকে শোকজ করা হবে। প্রয়োজনে অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
ঘটনার ব্যাপারে ইটভাটা মালিক ইকবাল মাহমুদ টিটো বলেন, ‘অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার সময় নিজের অস্ত্র নিজেই বহন করার কথা বলা হয়েছে। অস্ত্র কারও হাতে দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে নিজেই গুলি চালাতে হবে, এটাই আইন। এ ঘটনায় আইন লঙ্ঘন করা হয়নি।’