দুজন রোগীর নাম এক; শারীরিক সমস্যা আলাদা। দুজনেই ভর্তি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে। একই দিনে তাদের ছাড়পত্র দেন চিকিৎসক।
এতেই বাধে বিপত্তি। নার্সের ভুলে একজনের ব্যবস্থাপত্র চলে যায় আরেকজনের কাছে। ভুল ওষুধ সেবনের আগেই অবশ্য ধরা পড়েছে বিষয়টি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ব্যবস্থা নিয়েছে দ্রুত।
রোগীর স্বজন ও হাসপাতালের লোকজন জানান, গত ২২ এপ্রিল ডায়াবেটিক ও কিডনিসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন দামুড়হুদা উপজেলার পীরপুরকুল্লা গ্রামের মাহির উদ্দীনের স্ত্রী রহিমা খাতুন। ৫৫ বছর বয়সী এ রোগীকে ১১ দিন চিকিৎসা দেয়ার পর চিকিৎসক সোমবার সকালে ছাড়পত্র দেন।
সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল হক তন্ময় রোগীর জন্য ওষুধসহ নানা পরামর্শ দেন। কিন্তু সার্জারি ওয়ার্ডের নার্স রোগীকে যে ছাড়পত্র দেন সেখানে দেখা যায় ঠিকানা ভিন্ন।
দায়িত্বরত নার্স সাবিনা খাতুনকে স্বজনরা বিষয়টি জানানো পর দেখা যায়, প্রেসক্রিপশনটি অন্য রোগীর। রহিমা খাতুন নামের সেই রোগী ততক্ষণে ভুল ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামের রহিমা গত রোববার পেট ব্যথা ও ইউরিন সমস্যা নিয়ে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। এক দিন পর সোমবার তাকে ছাড়পত্র দেন ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন।
ব্যবস্থাপত্র বদলের সংবাদ জেনে রোগী রহিমা খাতুন বলেন, ‘যদি অন্য রুগীর ওষুধ খাতাম, তালি আমি তো আরু অসুস্থ হয়ি পড়তাম। আমরা তো লিকাপড়া জানিনে। হাসপাতালের কাগজও পড়তি পারিনে। হাসপাতাল থেকি যে কাগজ দিয়িচে ওইটা দেকিয়ে দুকান থেকি ওষুধ কিনি নিয়ি আইচি।’
রহিমা খাতুনের ছেলে সাকিব রহমান বলেন, ‘বাড়ি ফিরে জানতে পারলাম মায়ের প্রেসক্রিপশনটা অন্যজনের। ভাগ্যিস ওষুধ এখনও তাকে খাওয়ানো হয়নি।’
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক ও স্পর্শকাতর। দুই রোগীর নাম একই হওয়ায় এমনটি ঘটেছে।’
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান বলেন, ‘ডায়াবেটিস নেই এমন কোনো রোগীকে ইনস্যুলিন (ইনজেকশন) পুশ করলে তার ব্লাডসুগার লেভেল অনেক কমে যাবে। কিন্তু সেবন করা কোনো ওষুধ দু-এক দিন সেবন করলে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
‘এক রোগীর ছাড়পত্র অন্য রোগীকে দেয়া আসলেই দায়িত্বে অবহেলার পরিচয়। ছাড়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে সেবিকাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’