ভোলার চরফ্যাশনে আলোচিত দুই ভাই হত্যা মামলায় ‘ভাড়াটে খুনি’ মো. শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রামের দেবপাড়া এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় ভোলা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সকালে তাকে ভোলায় আনা হয়।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার শরিফুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চর মানিকা ইউনিয়নে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালাতেন।
পুলিশ সুপার জানান, গত ৮ এপ্রিল চরফ্যাশন উপজেলার আছলামপুর ইউনিয়নের সুন্দরী ব্রিজের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি্র বাগান থেকে মাথাবিহীন দুইটি অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ১৪ দিন পর ঘটনাস্থলের পাশে একটি বাড়ির শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুটি মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে আছলামপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মো. বিল্লাল, আবুল কাশেম ও আবু মাঝিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত দুই ভাইয়ের নাম পরিচয় পাওয়া যায় এবং হত্যায় ব্যবহৃত ছেনি উদ্ধার ও ‘ভাড়াটে খুনি’ শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, দুই ভাই তপন ও দুলালকে হত্যা করতে শরিফুলকে আড়াই লাখ টাকায় ভাড়া করেন বিল্লাল। হত্যা করতে শরিফকে ২০ হাজার টাকা আগাম দেয়া হয়।
এ ঘটনায় চরফ্যাশন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হত্যা মামলা করেন। পরে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মিয়া নিউজবাংলাকে জানান, এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার সিরাজুল ইসলাম, আবু জাফর ওরফে জাফর ফরাজী ও তার স্ত্রী, আবুল কাশেম, হেলাল উদ্দিন, আলী আজগরসহ সাতজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
তদন্তে জানা গেছে, নিহত দুই ভাই তপন চন্দ্র শীল ও দুলাল চন্দ্র শীল তিন বছর আগে চরফ্যাশন পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে তাদের পৈতৃক ৫৬ শতাংশ জমি বিক্রি করে ভারত চলে যান। ওই জমি ২০ লাখ টাকায় কিনে নেন আছলামপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মো. বিল্লাল ও তার শ্বশুর আবু মঝি। তবে তারা মাত্র তিন লাখ টাকা দেন।
বাকি টাকা নেয়ার জন্য তপন ও দুলাল বাংলাদেশে আসেন। তাদের টাকা দেয়ার কথা বলে নির্জন বাগানে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।