দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে তিন কিশোরকে নির্যাতনের মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে রোববার মধ্যরাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে তিনজন এজাহার নামীয়।
তারা হলেন উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের আফজাল হোসেন, শাকিব বাবু, মমিনুল ইসলাম, পলাশ হোসেন ও জাফরপুর গ্রামের শিপন ইসলাম।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম জানান, গাছে বেঁধে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীসহ তিন কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় রোববার বিকেলে থানায় দুটি অভিযোগ জমা পড়ে। নির্যাতনের শিকার দুই কিশোরের বাবা লিখিত জানানোর পর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে তা মামলা হিসেবে নেয় পুলিশ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় আটজনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫/২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ত্রিমোহনী স্লুইস গেট এলাকার বাড়ি থেকে ওই তিন কিশোরকে বুদ্ধিজীবী মোড় এলাকায় ডেকে নেন স্থানীয় বাবু মাস্টারসহ কয়েকজন। ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে সেখানে তাদের গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়।
পরে ওই তিন কিশোরকে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদে হাজির করা হয়, দেয়া হয় অভিভাবকের জিম্মায়। সেখান থেকে প্রতিবন্ধী কিশোরসহ দুইজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরজনকে বাড়িতে নিয়ে যায় তার পরিবার।
আহত এক কিশোর বলে, ‘হঠাৎ করেই বাবু মাস্টারসহ তাদের লোকজন আমাদেরকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। পরে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন চালায়। নির্যাতন সইতে না পেরে চুরির অপবাদ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছি। তবে চুরি সম্পর্কে কিছুই জানি না।
‘মারধরের পর সালিশ-বৈঠকে আরও দুই কিশোরকে হাজির করতে বলা হয়। হাজির করতে না পারলে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দেয় মাতবররা। পরে গাভী ও চার্জার রিকশাভ্যান নিয়ে যান মাতবরের লোকজন।’
এক কিশোরের বাবা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে এক প্রতিবন্ধী ও আমার ছেলেসহ তিনজনকে ছাগল চোর সাজিয়ে বর্বর নির্যাতন চালায় বাবু মাস্টারসহ তার লোকজন। ছেলেকে ধরে নির্যাতন করা হচ্ছে জেনে ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মোস্তাকিম সরকার বাবু মাস্টার বলেন, ‘মারপিট করা ভুল হয়ে গেছে। আমি সার্ভিস করি। আমার যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন।’
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।