ফরিদপুরে পুলিশ হেফাজতে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন মোল্লা। তার বাড়ি সালথা উপজেলার গোপালিয়া গ্রামে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি।
গেল ৫ এপ্রিল রাতে সালথা উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ১৬ এপ্রিল গ্রেপ্তার দেখানো হয় আবুল হোসেনকে। ২৮ এপ্রিল তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, আবুল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। ভোর পাঁচটার দিকে তিনি শৌচাগারে যান। সেখানে তিনি পড়ে গেলে দ্রুত ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তোফাজেল হোসাইন জানান, ‘শনিবার সকাল ৬টার দিকে ডিবি পুলিশের সদস্যরা আবুল হোসেনকে নিয়ে আসেন। আমি তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। কীভাবে মারা গেছে সেটি ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’
সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু বলেন, ‘আবুল হোসেন কৃষি কাজ করতেন। তার পরিবার স্বচ্ছল ছিল। যে কারণে গ্রামের কোনো দলাদলিতে তিনি যেত না। সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পায়। এর তিন দিন যেতে না যেতেই তার মৃত্যুর খবর পেলাম।’
নিহত আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা নির্দোষ। গ্রামে কোনো রাজনীতি করতো না। তাকে অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছে। এখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সঠিক তদন্ত এবং ন্যায় বিচার চাই।’
গত ৫ এপ্রিল লকডাউন বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে সরকারি কর্মচারীর লাঠিপেটায় এক ব্যক্তি আহত হওয়ার পর রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা।
এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা পরিষদ, থানা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন, উপজেলা কৃষি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
ইউএনওর গাড়ি ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে ফরিদপুর, ভাঙ্গা ও আশপাশের থানার অতিরিক্ত পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় ৯টি মামলা হয়েছে।