কুড়িগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় কেজিদরে তরমুজ বিক্রি নিয়ে ক্রেতা আর বিক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে।
ক্রেতারা এক বা দুই কেজি তরমুজ চাইলেও বিক্রেতারা তা দিতে রাজি হচ্ছেন না। ক্রেতারা বলছেন, যদি কেজিতে বিক্রি হয়, তাহলে তাদের চাহিদা মতো পরিমাণ তরমুজ দিতে হবে।
শহরের পৌরবাজার, জিয়া বাজার, ত্রিমোহণী, ভকেশনাল মোড়সহ বিভিন্ন বাজারে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। প্রতি কেজি তরমুজের দাম হাঁকানো হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সঙ্গে দাম নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে অনেকে তাই এক কেজি তরমুজ চাচ্ছেন দোকানির কাছে। এ নিয়েও চলছে বাকবিতণ্ডা।
কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী, কোনো ফল পাইকারিতে পিস হিসেবে কিনলে খুচরাতেও বিক্রি করতে হবে পিস হিসেবে। আর পাইকারিতে কেজি দরে কিনলে খুচরাতেও সেভাবে বেচা যাবে।
গত কয়েকদিনে বরিশাল, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাইকারিতে পিস হিসেবে কিনে খুচরায় কেজিদরে বিক্রি করায় বিক্রেতাদের জরিমানা করা হচ্ছে। তবে কুড়িগ্রামে এর কোনো উদ্যোগ নেই।
ক্রেতাদের ধারণা, পিস হিসেবে কিনলে দাম পড়ত কম, তাই কুড়িগ্রামেও এই ধরনের অভিযান চালানোর দাবি উঠেছে।
রিকশাচালক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই লকডাউনে আমাদের ইনকাম তেমনটি নেই। দিন শেষে যা আয় হচ্ছে কোনো রকমে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে হচ্ছে। তরমুজের যে দাম তাতে করিয়া এ বছর তরমুজ খাওয়া হবে না। এক কেজি চাউলের চায়া এক কেজি তরমুজের দাম বেশি।’
ক্রেতা আলতাফ হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনের বাজার মনিটরিং প্রয়োজন। তরমুজ পুষ্টিকর এবং রসালো খাবার। অথচ এর উচ্চ দামে ও কেজি প্রতি হওয়ায় তা অনেকের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে।’
পৌরবাজারে তরমুজের পাইকারি বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বগুড়া ও খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় ছোট মিলে তরমুজ পিচ অনুযায়ী কিনে আনি। এখানে মণ বা কেজিতে বিক্রি করি। তা ছাড়া আমাদের কেরিং কস্টও (পরিবহণ খরচ) অনেক পড়ে। তাই কেজিতে বিক্রি করছি।’
আরেক ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জমি থেকে কীভাবে তরমুজ কিনে আনি সেটা আপনি কি জানেন? প্রশাসন বুঝি না। আমরা পিচ নয়, কেজিতেই বিক্রি করব।’
জিয়া বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পৌরবাজার থেকে মণ কিনে খুচরা কেজিতে বিক্রি করি। পৌরবাজারে আড়তদার ইসহাক ও মোস্তাফিজারের কাছ থেকে কিনি। তারা দূর থেকে পিস হিসেবে কিনে আনে। তারা পিচ বিক্রি করতে পারলে আমরাও পারব।’
তিনি দাবি করেছেন, ম্যাজিস্ট্রেট তো এসে দেখে গেছেন। তারা অনুমতি পেয়েই কেজি দরে বিক্রি করছেন। তবে কোন ম্যাজিস্ট্রেট এই ধরনের অনুমতি দিয়েছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তরমুজের দাম সহনশীল পর্যায়ে রাখতে আমরা নজর রাখছি। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।’