ভারত থেকে ভোলা ফেরা এক শিক্ষকের বাড়ি লকডাউন করে বাসিন্দাদের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সে দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনার স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়া রোধে সতর্কতার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-নোমানের নেতৃত্বে বাড়িটি লকডাউন করা হয়। টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে একটি লাল পতাকা। ১৪ দিনের জন্য কাউকে বাড়ির বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
জেলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা লেঙ্গুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান গত ১৩ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য ভারত যান। শুক্রবার তিনি লালমোহন আসেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাশাপাশি সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদুল ইসলাম বাড়িটিতে যান।
ভারত থেকে দেশে কোনো নাগরিক আসলে তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। যশোরের বেনাপোল থেকে তোলা
ইউএনও আল নোমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজলুর রহমান ভারতের চেন্নাই থেকে শুক্রবার বাড়িতে আসেন। আমরা তার বাড়ি ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করে দিয়েছি। তাকে আলাদা একটি কক্ষে রাখার জন্য পরিবারকে নির্দেশ দিয়েছি।’
তবে সীমান্তে বিধিনিষেধের মধ্যে কীভাবে তিনি এলাকায় ফিরলেন এই বিষয়টির সদুত্তর এখনও মেলেনি। সীমান্ত বন্ধ অবস্থায় শর্তসাপেক্ষে দেশে ফেরা গেলেও তাদেরকে সীমান্তে পরীক্ষা করে নেগেটিভ এলেও ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকার শর্ত দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যেই এর বিভিন্ন সীমান্তে কোয়ারেন্টিনে থাকার জায়গার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বজলুর রহমান সেসব শর্ত না মেনে এলাকায় ফেরায় নিশ্চিত হয়ে গেল যে, কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থায় দুর্বলতা রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ভারত পরিস্থিতি তৈরি করেছে নতুন উদ্বেগ। দেশে করোনার প্রকোপ চলমান লকডাউনে কিছুটা কমে এলেও ভারতে তা বেড়েই চলেছে।
সেখানে ছড়িয়ে পড়া বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট প্রতি দিন লাখ লাখ রোগীকে আক্রান্ত করার পাশাপাশি প্রাণহারিও হচ্ছে ব্যাপক। এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। আর এর স্বল্পতায় বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
করোনার ইতালির পর ইউকে, সাউথ আফ্রিকা এবং সব শেষ নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে ভারতের বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে শঙ্কার কারণ দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী দেশটিতে যান, আবার ফিরেও আসেন।
এই অবস্থায় করোনা মোকাবিলায় গঠন করা জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের পর গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তবে যারা ভারতে চিকিৎসা বা অন্য কোনো কাজে গিয়ে আটকা পড়েছেন, তাদেরকে অনুমতিসাপেক্ষে ফেরত আসতে দেয়া হচ্ছে। আর দেশে ফিরলেও সীমান্তেই থাকতে হতো বজলুর রহমানকে।