বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাস্ক না পরায় এবার চুয়াডাঙ্গায় রৌদ্রদণ্ড

  •    
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৯:১১

‘এটা জনসাধারণেরর মাঝে সচেতনতা বাড়াতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য করা হচ্ছে। যারা মাস্কবিহীন চলাচল করছে তাদের আটক করে থানা চত্বরে প্রায় ৩০ মিনিট রোদে বসিয়ে রেখে সাময়িক শাস্তি দেয়া হয়। পরে তাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাদের মুখে মাস্ক নেই কেবল তাদেরকেই শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে মাস্ক না পরে বের হওয়ায় ৩০ যুবককে তীব্র রোদের মধ্যে থানা চত্বরে বসিয়ে রেখে শাস্তি দিয়েছে পুলিশ।

আলমডাঙ্গা থানা চত্বরে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই চিত্র দেখা যায়।

সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর কোনো ধারায় এ ধরনের শাস্তির বিধান না থাকলেও মানুষকে সচেতন করতে একটু কঠোর হতে হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি, সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এটা জনসাধারণেরর মাঝে সচেতনতা বাড়াতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য করা হচ্ছে। যারা মাস্কবিহীন চলাচল করছে তাদের আটক করে থানা চত্বরে প্রায় ৩০ মিনিট রোদে বসিয়ে রেখে সাময়িক শাস্তি দেয়া হয়। পরে তাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। যাদের মুখে মাস্ক নেই কেবল তাদেরকেই শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ থেকেই সাধারণ মানুষ শিক্ষা নেবেন ও নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মানবেন। তা না হলে আরও কঠোর হবে পুলিশ।’

এই শাস্তির আওতায় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন যুবককে আলমডাঙ্গা থানা চত্বরে বসিয়ে রাখা হয়।

জেলার আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুরে রোদের প্রচন্ড তাপের মধ্যে ওই যুবকদের প্রায় আধাঘণ্টা বসিয়ে রাখার আইনি ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পুলিশ।

এএসপি জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিদিন মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পথচারি ও জনসাধারণের মাঝে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাস্ক বিতরণ করা হয়।

এদিকে, সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর কোনো ধারায় অবশ্য এ ধরনের শাস্তির বিধান পাওয়া যায়নি।

এ আইনের ২৪(১) ধারায় ‘সংক্রামক রোগের বিস্তার এবং তথ্যগোপন’ এর অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটিতে সহায়তা করেন, বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার নিকট গোপন করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।’

এই অপরাধের দণ্ড হিসেবে ২৪ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’

মাস্ক না পরলে করলে অর্থদণ্ড বা কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও সেটি কেন অনুসরণ করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে একটু কঠোর হতে হচ্ছে। আমরা মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করছি। মাস্ক দিচ্ছি। যারা মাস্ক ছাড়া রাস্তায় চলাচল করছেন কেবল তাদেরকেই শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। পরে সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়ে ও মাস্ক দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে শারীরিক বা মানসিকভাবে কাউকে শাস্তি দিতে হবে এমন বিধান নেই। আইনের কোথাও এমনটা বলা হয়নি। তবে, পুলিশ ভালোর জন্য হয়তো কাজটি করেছে।’

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান জানান, এই তাপমাত্রায় মানুষকে একটানা ২০-৩০ মিনিট কড়া রোদে বসিয়ে রাখলে বা দাঁড় করিয়ে রাখলে হিট স্ট্রোক, মাথা ব্যথা, চর্মরোগসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

এর আগে বুধবার ময়মনসিংহে লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে বের হওয়া পথচারীদের তীব্র রোদের মধ্যে প্রায় আধাঘণ্টা রাস্তায় বসিয়ে রেখে শাস্তি দেয় পুলিশ।

এই শাস্তির আওতায় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৬০ জনকে মাস্ক পরিয়ে রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর