বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অবৈধ গ্যাস সংযোগ: চোর-পুলিশের ‘বন্ধুত্ব’

  •    
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:৫৩

অবৈধ সংযোগ দেয়ার সময় বিষয়টি জানানো হয় আশুলিয়া থানাকেও। উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকির বলেন, আসতে দেরি হবে। ঘণ্টাখানেক পর তিনি ঘটনাস্থলে এসে উল্টো বিরক্তি প্রকাশ করেন। অবৈধ সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাংবাদিকদের জেরা করতে থাকেন। সাংবাদিকদের ভিজিটিং কার্ডও সংগ্রহ করেন। কোনো প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এসআই মিলন ফকির।

রাত গভীর হলে ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগে জড়িতদের তৎপরতা বাড়ে। মাঝে মধ্যে অবশ্য অভিযান চলে। অবৈধ লাইনগুলো উচ্ছেদ করা হয়, কিন্তু জড়িতদের সাজা হয় না।

আবার এমন অভিযোগও আছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির ঘটনা পুলিশকে জানালেও নেয়া হয় না ব্যবস্থা। এমনও ঘটেছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ চিহ্নিত অবৈধ গ্যাস চোরদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই ফিরে এসেছে। উল্টো গোপন খবর প্রদানকারীদের নানা ভাবে হেনস্তারও অভিযোগ আছে।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আশুলিয়ার জামগড়া, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, চিত্রশাইলসহ বেশ কিছু এলাকায় রাতের আঁধারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে।

মূলত রমজান মাসেই এই অবৈধ সংযোগ দেয়া হয় বেশি। সংযোগ প্রতি ২০-৫০ হাজার পর্যন্ত টাকা নেয়া হয়।

মঙ্গলবার ভোরে আশুলিয়ার তাজপুর ইউসুফ মার্কেট এলাকায় জেনারেশন লিমিটেড নামে একটি গার্মেন্টের সামনে অবৈধ সংযোগ দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। স্থানীয়দের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে রফিক নামে এক শ্রমিককে তড়িঘড়ি করে গর্ত বন্ধ করতে দেখা গেলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।

বেশ কিছু এলাকাজুড়ে সেখানে গর্ত করে রাখা অবস্থায় পাওয় যায়। মূলত এসব গর্ত দিয়েই মূল সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে এক কিংবা দেড় ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ সংযুক্ত করে সংযোগ নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সেখানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানকারী হিসেবে পরিচিত মো. রশিদ, নাজিম উদ্দিন ও আবুল কাশেম সহ ১০-১৫ জন দলবেঁধে সেখানে উপস্থিত হন। তারা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকেন।

বিষয়টি জানানো হয় আশুলিয়া থানাকেও। উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকির বলেন, ‘আসতে দেরি হবে।’

ঘণ্টাখানেক পর তিনি ঘটনাস্থলে এসে উল্টো বিরক্তি প্রকাশ করেন। অবৈধ সংযোগ প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাংবাদিকদের জেরা করতে থাকেন। সাংবাদিকদের ভিজিটিং কার্ডও সংগ্রহ করেন। কোনো প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এসআই মিলন ফকির।

অভিযুক্ত আবুল কাশেমও বলেন, ‘আপনেরা ১০ মিনিট খাড়ান। আমি বইলা, ট্যাকাটা নিয়া দিতাছি। আপনেরা ট্যাকাটা নিয়া যানগা। আমার নাম, নম্বর নিয়া কী করবেন? আমার নম্বর টম্বর দিয়া লাভ নাই। আমার কোনো সমস্যা নাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবৈধ গ্যাস গ্রহীতা বলেন, ‘এলাকায় প্রায় ৪০-৫০টা বাড়িতে গ্যাস দিব কইয়া ২০-৫০ হাজার কইরা ট্যাকা নিছে। আমরা তো জানি না কুনডা বৈধ, কুনডা অবৈধ। অহন আমাগো দিছে আমরা নিতাছি।’

যিনি এই খবর গণমাধ্যমকর্মীদেরকে দিয়েছেন, তিনি এনেছেন হয়রানির অভিযোগ। বলেন, ‘এলাকায় তো আমারে নিয়া তাণ্ডব চলতাছে। আমি নাকি এলাকায় পুলিশ, সাংবাদিক আইনা ভরায় ফেলছি। বিষয়টা এই পর্যন্ত শেষ করা যায় না?’

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন ফকিরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ভাই, আপনারা চলে যান। ঘটনাস্থলে যাইয়া কাউরে পাই নাই। আর লিখিত কোনো অভিযোগ পাই নাই। তদন্ত চলতেছে। তদন্ত চলুক, তদন্তের প্রেক্ষিতে যেটা হয় আর কী। আর কী দিয়া, কী হয় আমি জানামুনে।’

এর আগে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলামকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়ার বিষয়টি জানানো হলে তিনি ওই এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তবে এরপর থেকে তাকে আর চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর